ডেস্ক রিপোর্ট : জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে তার। এ তথ্য দিয়েছেন গায়িকার স্বামী বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।
তিনি বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের খুব খারাপ অবস্থা। লাইফ সাপোর্টে আছেন। বেশি কিছু বলার নেই। শুধু দোয়া করবেন।’
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে গায়িকার শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানিয়ে ফরিদা পারভীনের পুত্র ইমাম জাফর নোমানী লিখেছিলেন, ‘সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আম্মাকে (ফরিদা পারভীন) গত বুধবার বিকাল থেকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকাল থেকেই ওনার স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে এবং ব্লাডপ্রেশার নেই।’
এরপর তিনি যোগ করেন, ‘এখন ডাক্তাররা সর্বোচ্চমাত্রার ঔষধ দিয়ে কৃত্রিমভাবে তাঁর ব্লাড প্রেশার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে এবং মেশিনের মাধ্যমে তাঁর ফুসফুসটা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এই পরিস্থিতিতে আম্মার শারীরিক অবস্থার উন্নতির আর তেমন কোনো আশা নেই। তারপরও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে আমরা আরও কিছু সময় ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে এই লাইফ সাপোর্টটা চালিয়ে নিচ্ছি।’
কয়েক বছর যাবত কিডনি রোগে ভুগছেন ফরিদা পারভীন।গত ৫ জুলাই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফরিদা পারভীনকে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসা শেষে ২২ জুলাই বাড়িতে ফিরেছিলেন এ সংগীতশিল্পী।
গেল ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হলে তাকে রাজধানীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে সেখানেই আইসিইউতে ছিলেন। জা বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুল সংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালন সংগীতের তালিম নেন ফরিদা পারভীন।
সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান তিনি। এছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা রয়েছে তার। এছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।