সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী খোলপেটুয়া নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জ্জন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জ্জনের লক্ষ্যে বুধবার বিকাল থেকে বুড়িগোয়ালিনী খোলপেটুয়া নদীতে নৌকায় করে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। পরবর্তীতে প্রদক্ষিণ শেষে নদীতেই প্রতিমা বিসর্জ্জন দিয়ে শান্তি জল নিয়ে সকলে বাড়ি ফেরেন। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জ্জন উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষ খোলপেটুয়া নদীর দুই পাড়ে ভীড় জমাতে থাকে এবাং কয়েক শত নৌকা, ট্রলার ও কার্গোতে করে দর্শনার্থীরা নদীতে আনন্দ উলাস করেন। বিজয়া দশমীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক মোঃ সাঈদ-উজ-জামান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস খালেদা আইয়ুব ডলি, থানা অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ, বুড়িগোয়ালিনী নৌ-পুলিশ থানার ওসি খান শরিফুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল, প্যানের চেয়ারম্যান আব্দুল রউফ, মেম্বর মুকুন্দ পাইক, বিকাশ মন্ডল প্রমুখ।
শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। পূজা অর্চনা, আরতি ও সিঁন্দুর খেলায় ভক্তরা দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রার্থনা করেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) তারিখে উপজেলার বিভিন্ন স্থান হতে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে প্রতিমা নিয়ে মহা ধুমধামের মধ্যে দিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
বিজয়া দশমীর সকালে বিভিন্ন পূজা ম-পে শুরু হয় পূজার শেষ আনুষ্ঠানিকতা। ভক্তরা মায়ের চরণে সিঁদুর, মিষ্টি ও ফুল নিবেদন করেন। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন স্থান থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। বাঁশি, ঢাক-ঢোল ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় নদী ও জলাশয়ে।
ম-পগুলোতে ছিল ভক্তদের চোখে জল আর আবেগঘন বিদায়ের দৃশ্য। নারীরা পরস্পরকে সিঁদুর পরিয়ে শুভকামনা বিনিময় করেন। তরুণ-তরুণীরা বিজয়ার প্রীতি আলিঙ্গনে মেতে ওঠেন।
প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হলো পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার মহোৎসব। সর্বত্রই ছিল নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও প্রশাসনের নজরদারিতে নির্বিঘেœ সম্পন্ন হয়েছে বিসর্জন কার্যক্রম। ভক্তদের বিশ্বাস, “আসছে বছর আবার হবে”Ñ এই প্রত্যয় নিয়েই দেবী দুর্গাকে বিদায় জানালেন তারা।