শরণখোলা অফিসঃ পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে বনদস্যু শরীফ বাহিনীর হাতে অপহৃত ৫ জেলের ৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে শুক্রবার রাতে বাড়ী ফিরেছেন। মুক্তিপণ দিতে না পারায় এখনো দস্যুদের হাতে আটক রয়েছেন দুই জেলে। উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন জিম্মি জেলেদের স্বজনরা। গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরাভোলা ও ধনিচাবাড়ীয়া এলাকা থেকে ঐ ৫ জেলেকে অপহরণ করে বনদস্যু শরীফ বাহিনী। এসময় দস্যুরা জেলেদের আহরিত মাছও লুটে নেয় বলে জেলেরা অভিযোগে জানায়। জিম্মীদের মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে বাড়ি ফিরেছেন তিন জেলে। জেলেরা হলেন শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের লাল মিয়া হাওলাদারের ছেলে রফিকুল ইসলাম, হাসেম হাওলাদারের ছেলে ইসমাইল এবং ছবদার তালুকদারের ছেলে বাদল। এসব জেলেদের পরিবার ও মহাজনরা কেউ ২০ হাজার কেউ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এখনো দস্যুদের হাতে দুই জেলে জিম্মি রয়েছেন । এরা হলেন শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের সেলিম মল্লিকের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে রাকিব। জিম্মি দুই জেলের মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। জিম্মি জেলে সাদ্দামের মা মঞ্জু বেগম জানান, দস্যুদের দেওয়া মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন সাদ্দামের বাবা। দস্যুদের কাছে এখন সাদ্দাম ও রাকিব জিম্মি রয়েছেন। তাদের ছাড়াতে হলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তারা গরীব মানুষ, এতো টাকা কোথায় পাবেন। তার পরও ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছি। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি দস্যুরা বলেন মঞ্জু বেগম। মুক্তিপণ দিতে না পারলে দুই জেলের ভাগ্যে কী ঘটবে সেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার। নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মৎস্য ব্যবাসয়ী জানান, দীর্ঘদিন সুন্দরবন শান্ত ছিল। বর্তমানে কয়েকটি দস্যু বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত জেলেদের অপহরণ করছে। এরই মধ্যে তিন জেলেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন তারা। এখনো দুই জেলে জিম্মি রয়েছেন। সুন্দরবনের মধ্যে জেলেরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। লাখ লাখ টাকা চালান খাটিয়ে মহাজনরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দ্রুত এসব দস্যু বাহিনী নির্মূলে কঠোর অভিযান না করলে আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে সুন্দরবন। শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শহীদুল্লাহ বলেন,সুন্দরবনে বনদস্যুদের হাতে আটক জিম্মী জেলের বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি। পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনে বনদস্যুদের প্রতিরোধে বনরক্ষীরা টহল জোরদার করেছে এবং জিম্মী জেলেদের উদ্ধারে কোষ্টগার্ডের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে ডিএফও জানিয়েছেন।