ডেস্ক রিপোর্ট : দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৬ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু। মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই তীব্র সমালোচনার মুখে সোমবার (৬ অক্টোবর) পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ঘনিষ্ঠ এই সহযোগীর পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন।
সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর আগে, পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু। ফরাসি রাজনীতিতে এই পরিবর্তনের পেছনে ছিল পার্লামেন্টে রাজনৈতিক ভারসাম্যের চরম সংকট।
নিয়োগের প্রায় এক মাস পর রোববার সন্ধ্যায় নিজের মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করেন লেকোর্নু। সোমবার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই সেই তালিকা ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। মন্ত্রিসভায় তেমন কোনো পরিবর্তন না থাকায় বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন জোটের অনেক সদস্যও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
জাতীয় পরিষদের একাধিক দল অভিযোগ তোলে, নতুন মন্ত্রিসভায় আগের সরকারের ব্যর্থ সদস্যদেরই পুনরায় রাখা হয়েছে। তারা এই মন্ত্রিসভা বাতিলের দাবিতে ভোটের হুমকিও দেয়। এমনকি কেউ কেউ আগাম নির্বাচন চায়, কেউ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগও দাবি করে।
সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রী লেকোর্নু পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করেন। এর ফলে ফ্রান্সে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হলো। গত বছরের জুলাই থেকে দেশটির সংসদে সরকার কোনো দলীয় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় একের পর এক রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ফলে বাজেট পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়ছে।
সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু ছিলেন ম্যাক্রোঁর দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। তার সংক্ষিপ্ত সময়ের মেয়াদে মন্ত্রিসভা গঠনই হয়ে উঠলো প্রধান রাজনৈতিক বিতর্ক। এখন দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, আর কিভাবে এই রাজনৈতিক সংকট থেকে ফ্রান্স মুক্তি পাবে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানায়, নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়নের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও আসেনি। ম্যাক্রোঁ এর আগেও স্পষ্ট করেছেন, ২০২৭ সালে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিনি পদত্যাগ করবেন না।