ডেস্ক রিপোর্ট : আফগান তালেবানের হামলার জবাবে সীমান্তে আফগানিস্তানের ১৯টি চৌকি দখল করার দাবি করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। রোববার (১২ অক্টোবর) পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানায়। বিষয়টি নিয়ে পৃথকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডন ও রেডিও পাকিস্তান।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় গুলি ছোড়ে। তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানি বাহিনী সীমান্ত বরাবর থাকা আফগানিস্তানের অন্তত ১৯টি চৌকি দখলে নেয়। এতে চৌকিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা অনেক তালেবান সদস্য নিহত হয়েছেন এবং বাকিরা পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করা হয়। কিছু চৌকিতে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটে।
রেডিও পাকিস্তানের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তালেবানের মনোজবা ক্যাম্প ব্যাটালিয়নের সদর দফতর, জান্দুসার পোস্ট, তুর্কমেনজাই ক্যাম্প এবং খারচর দুর্গ সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী আরও জানায়, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র কিছু দল পাকিস্তানের সীমান্তে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। তবে আগেভাগেই সতর্ক অবস্থানে থাকা পাকিস্তানি বাহিনী দ্রুত ও শক্ত জবাব দেয়। ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল, খাওয়ারিজ নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠীকে সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে পাকিস্তানে ঢোকানো।
ঘটনার পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে তালেবানের গুলিবর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সাহসী নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত দ্রুত ও কার্যকর জবাব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো উসকানির মুখে একইভাবে জবাব দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের জনগণ তাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ এবং আফগানিস্তানকেও ভারতের মতো উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
ঘটনার পর আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই সংঘাতের পেছনে প্রথম হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানই। তারা জানায়, কাবুল এবং পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানি বিমান হামলার পর তালেবান বাহিনী পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেন, এটি ছিল পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের জবাব।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যদি পাকিস্তান আবার আফগানিস্তানের আকাশসীমায় অনধিকার প্রবেশ করে, তাহলে তালেবান বাহিনী আরও কঠিন জবাব দিতে প্রস্তুত।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের বিমান হামলার জেরে সীমান্তজুড়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানান, ছয়টিরও বেশি স্থানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং আফগানিস্তান থেকে কোনো রকম উসকানি ছাড়াই গুলিবর্ষণ শুরু হয়েছিল। এর জবাবে তারা ‘পূর্ণ শক্তি’ দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।