ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকরা এখন আগাম শীত মৌসুমেও বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। সাধারণত শীতকালীন এসব সবজি আধুনিক প্রযুক্তি ও চাষপদ্ধতির ব্যবহারে এখন বছরের অন্যান্য সময়েও আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে বাজারে ভালো দাম পেয়ে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
উপজেলার খর্নিয়া, আটলিয়া, শোভনা, সাহস ও শরাফপুর ইউনিয়নের কৃষকরা এবার বাঁধাকপি ও ফুলকপির ভালো ফলন পেয়েছেন।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এসব সবজি এখন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, বর্তমানে প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি বিক্রি করে প্রায় ৯০ থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাভ হচ্ছে। বাজারে কপির চাহিদা বেশি থাকায় কৃষকরা অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় এবার দ্বিগুণ পর্যন্ত লাভ করছেন। উপজেলার বরাতিয়া গ্রামের কৃষক তাপশ জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। তার হিসাবে প্রতি বিঘায় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং তিনি দ্বিগুণ লাভের আশায় আছেন।
খর্ণিয়া গ্রামের কৃষক কৃষ্ণপদ রায় জানান, তিনি ৪০ শতক জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা, বিক্রি করেছেন প্রায় ১ লক্ষ টাকায়। একই গ্রামের মো. সিরাজ সরদার ৫০ শতক জমিতে বাঁধাকপি চাষ করে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচে এ পর্যন্ত ৯০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছেন।
লালন হোসেন নামে আরেক চাষী জানান, তিনি দেড় বিঘা জমির বাঁধাকপি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
কৃষকদের মতে, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা বিশেষ গরম সহনশীল জাতের কপির বীজ ব্যবহার করেছেন। এসব জাত অল্প সময়ে ফলন দেয় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইনসান ইবনে আমিন জানান, এ বছর ডুমুরিয়া উপজেলায় ৬৭ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন বাঁধাকপি এবং দুই হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের আগাম শীতকালীন কপি চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ নিয়মিতভাবে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরই ডুমুরিয়ায় আগাম শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের পরিধি বাড়ছে। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি স্থানীয় অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।