দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা থেকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী জ্বালানী উপকরন খড়কুটোর গাদা এখন কালের স্বাক্ষী হয়ে ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে কৃষকের বাড়িতে এখন আর আগের মত খড়ের গাদা তেমন দেখা যায় না। উপজেলায় ৮০ কিংবা ৯০ দশকের সময়ে এই সকল উপকরন ছাড়া জীবনযাপন করা একেবারেই অচল ছিল। উপজেলার গ্রামাঞ্চলের বসতঘরের পাশে খড়ের গাদা রান্নার জন্য বর্ষা মৌসুম কিংবা আপাদকালীন সময়ের জন্য জ্বালানী হিসাবে মজুদ করে রাখা হতো। তবে জ্বালানী হিসাবে গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের বাড়িতে কেরোসিন তেলই ছিল একমাত্র ভরসা। আধুনিকতার স্পর্শে ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। উপজেলায় সর্বত্র রান্না বান্নার জন্য এলপিজি গ্যাসের ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ছে।
উপজেলায় ৮০’র দশকের পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করায় মানুষের মধ্যে আধুনিকতা ও পরিবর্তন ছোঁয়া লেগে যায়। উপজেলা সদরসহ আশেপাশের কিছু এলাকায় বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হয়ে যায়। এরই মধ্যে রান্নার জন্য বৈদ্যুতিক হিটারের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। ফলে দিন দিন জ্বালানীর বিকল্প খড়কুটোর গুরুত্ব কমে যায়। তবে একুশ শতকে উপজেলা থেকে গ্রামাঞ্চল এবং বিচ্ছিন্ন কিছু চর এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছে যাওয়ায় এই ধরনের উপকরনের আর প্রয়োজন তেমন হয় না। এছাড়া সৌর বিদ্যুতের কারনে বিদ্যুৎ না থাকলেও কিছুটা সময়ের জন্য এলাকা আলোকিত থাকে। তবে প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে এখনও বিদ্যুৎ পৌছে নাই সেই সমস্ত এলাকায় এখনও জ্বালানী উপকরন হিসাবে খড়ের গাদা এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে।
উপজেলা থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই সমস্ত উপকরন। গ্রাম বাংলার রূপের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হাজার বছরের বিকল্প উপকরন খড়ের গাদা যা এখন বিলুপ্তির পথ থেকে কালের স্বাক্ষী হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল এই বিষয়ে বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য সোনালী প্রান্তর থেকে এক সময় কালের জ্বালানী খড়কুটোর উপকরনগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আধুনিকতার বদৌলতে মানুষ রান্নার জন্য এখন এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করছে। এক সময় আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খড়ের গাদা এখন কেবলই স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে। বিগত দিনকে পিছনে ফেলে বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামীন ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।