মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বহেরাতলা সৌদি প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সকল কার্যক্রম বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান। চিঠিতে সৌদি প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির সকল কার্যক্রম বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়েছে। চিঠিতে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান উল্লেখ করেন মঠবাড়িয়ার বহেলাতলা এলাকায় মোঃ মনির হোসেনের মালিকাধীন সৌদি প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত অসংগতির কারণে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা গেল। চিঠিতে উল্লেখিত অসংগতির মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। এছাড়া টিআইএন, ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন সদন, প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স (হসপিটাল), প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স (ডায়াগনস্টিক) ও ফায়ার লাইসেন্স এর মেয়াদোত্তীর্ণ। অপর দিকে পরিবেশ ছাড়পত্র, নারকোটিক সনদ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তি পাওয়া যায়নি। সিভিল সার্জন জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠির কপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ), বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, পিরোজপুর পুলিশ সুপার, মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করেছেন।
এব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাকিল সরোয়ার বলেন, আমরা অনুলিপির কপি পেয়েছি। এখন প্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য প্রশাসনকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো।
পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান বলেন, হাসপাতালটি বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে হাসপাতালটি সিলগালা করে দিবেন।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাইয়ূম বলেন, পিরোজপুর সিভিল সার্জন কর্তৃক জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরিত চিঠির অনুলিপি আমরা পেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত ডিসি স্যার এ বিষয়ে আমাকে কোন দিক নির্দেশনা দেননি।
এব্যাপারে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান সাংবাদিকদের জানান, এবিষয় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে সৌদি প্রবাসী হাসপাতালের মালিক মনিরসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ওই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন করে মৃত্যুর পথযাত্রী নারী আসমা বেগমের ছেলে কলেজ ছাত্র মো: ফোরকান। ফোরকান পিরোজপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত মঠবাড়িয়া চৌকিতে সম্প্রতি মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় সৌদি প্রবাসী হাসপাতালেরে মালিক মনির সহ এজাহার নামীয় ৩জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩জন নারী নার্সকে আসামী করা হয়েছে । বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে দাখিলী দরখাস্তখানা এজাহার হিসেবে গন্য করে নিয়মিত মামলা রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী এডভোকেট নিজাম উদ্দিন জাকির-সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভূল অপারেশনের শিকার ওই নারীর জীবন বিপন্ন। মৃত্যুপথযাত্রী গুরুতর অসুস্থ্য হতদরিদ্র ওই গৃহবধূ গত তিনমাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে অপারেশনসহ চিকিৎসা নিতে গিয়ে সর্বশান্ত। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আদালতের আদেশে মামলাটি থানায় এজাহার হিসেবে গন্য করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর আছে।