যশোর প্রতিনিধি : অতি ফর্সা চামড়ার রঙের কারণে জন্ম মুহূর্ত থেকেই পিতৃপরিচয় হারানো ছোট্ট আফিয়ার জীবনে নেমে এসেছিল অবর্ণনীয় অমানিশা। সেই বেদনার সময়ে তার হাত ধরে পাশে দাঁড়ালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আফিয়া ও তার অসহায় মায়ের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ লেখাপড়ার দায়িত্ব সবই তুলে নিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে আফিয়াকে তার বাবার পরিবারে ফেরাতে উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছেন দলের নেতাদের।
শুক্রবার সকালে যশোর সদর উপজেলার রামনগর বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামে শিশুটি ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও যশোর–৩ আসনের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে হৃদয়বিদারক প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই দ্রুত এই মানবিক উদ্যোগ নেন তারেক রহমান—এ তথ্যই পৌঁছে দেন অমিত।
বৃহস্পতিবার রাতে 'বিদেশীদের মতো গায়ের রঙ হওয়ায় সন্তানকে অস্বীকার; মানবেতর জীবন আফিয়া ও তার মায়ের' শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে বিষয়টি দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে।
পারিবারিকভাবে ২০২০ সালে মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে মনিরা খাতুনের বিয়ে হয়। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর জন্ম নেয় তাদের মেয়ে আফিয়া। ইউরোপীয়দের মতো অতি ফর্সা রঙ নিয়ে জন্মানো এই শিশুটিকে একবারের জন্যও কোলে নেননি মোজাফফর। জন্মের পর থেকেই তিনি সন্তানকে অস্বীকার করেন; স্ত্রীকে ফেলে অন্যত্র বাস শুরু করেন এবং আট মাস পর তালাক দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান। এরপর সমাজের অবহেলা আর তুচ্ছতাচ্ছিল্যের ভার বইতে বইতে মনিরা আশ্রয় নেন সৎমায়ের বাড়িতে। সেখানে খেয়ে না খেয়ে, শত গঞ্জনা সয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন মা-মেয়ে।
এই করুণ চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরই বিষয়টি নজরে আসে তারেক রহমানের। তাঁর নির্দেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আফিয়া ও মনিরার খোঁজখবর নেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান—আগামী দশ দিনের মধ্যেই তাদের জন্য একটি নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে; আফিয়ার পুরো শিক্ষা জীবন দেখভাল করবেন তারেক রহমান নিজেই।
অমিত বলেন, “আফিয়া জেনেটিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত—এ ধরনের সমস্যা লাখে একজনের হয়। অজ্ঞতা ও অশিক্ষার কারণে পরিবার ও সমাজ একটি নিষ্ঠুর দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। তবু আমার নেতার নির্দেশে আমরা আফিয়ার পাশে আছি এবং থাকবো।”
তারেক রহমানের দ্রুত মানবিক উদ্যোগে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন মনিরা খাতুন। চোখ ভেজা কৃতজ্ঞতায় তিনি শুধু বলেন—
“অনেকদিন পরে মনে হলো, আমার সন্তানকে কেউ আপন বলতে চেয়েছে।”