সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সুন্দরবনের গভীর থেকে অবৈধভাবে ঝিনুক সংগ্রহের মহোৎসব চলছে। প্রতিনিয়ত শত শত কেজি ঝিনুক সংগ্রহ করে পাচার করা হচ্ছে বিদেশে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল, নদী ও চরাঞ্চল থেকে দলবদ্ধভাবে অসাধু চক্র ঝিনুক সংগ্রহ করছে। এসব ঝিনুক পরে চক্রাকার দালালের মাধ্যমে বস্তায় ভরে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা, চিটাগাংসহ বিভিন্ন স্থানে এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এক কেজি ঝিনুক বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বিদেশে এর দাম কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় পাচারকারীরা ঝুঁকি নিয়েও প্রতিনিয়ত এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, এভাবে অবাধে ঝিনুক আহরণ করা হলে সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। কারণ ঝিনুক নদী ও খালের পানি পরিশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো হ্রাস পেলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং মাছের প্রজনন কমে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, সুন্দরবনের নদীখাল যেমন কুনচিখাল, কাললাট, দলদুলির চর, কাঠেশশ্বর, কাইনমারীর চর, সাপখালির চরসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান হতে ঝিনুক উত্তোলন করে নিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এবিষয়ে পাঁচারকারী দলের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাযায় স্থানীয় কিছু কাঁকড়া সফ্টসেল কোম্পানি এই ঝিনুক কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দেশের বাহিরে ও পাঁচার করছে।
এ বিষয়ে সফটসেল কোম্পানিদের সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এলাকার মানুষ বেকার পড়ে আছে তাছাড়া এই ঝিনুক নদীর কি উপকারে আসে আমরা নিয়ে বিক্রি করছি দুটো পয়সায় এলাকার লোকও তো পাচ্ছে, আপনারা সাংবাদিকরা কেন এতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন।
বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি জানতে চাইলে বনবিভাগের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, সুন্দরবন থেকে ঝিনুক পাঁচার হচ্ছে বিষয়টি আমরা জানতাম না, তবে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা প্রতিনিয়ত সুন্দরবন সংলগ্ন লকালয়ে টহল অব্যাহত রেখেছি, ওই কর্মকর্তা আরও বলেন ইতিমধ্যে বনবিভাগ অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ঝিনুক উদ্ধার করে নদীতে অবমুক্ত করেছেন। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ও জানান তিনি।
পরিবেশবাদী সংগঠনের ইমাম হোসেন, শাহীন বলেন নদী থেকে ঝিনুক উঠালে যেমন ক্ষতি হয় পরিবেশের তেমনি ক্ষতি হয় নদীর মাছ ও জীববৈচিত্র্যর, তায় স্থানীয় প্রশাসনের নিকট দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছেন এ নেতারা, যেন সুন্দরবনের ঝিনুক সম্পদ রক্ষা করা যায় এবং বিদেশে পাঁচার বন্ধ হয়।