1. mesharulislammonir1122@gmail.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন
  2. info@www.sangjogprotidin.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ অপরাহ্ন

সাতক্ষীরার পতিত জমিতে রেকর্ড পরিমাণ পানি ফল উৎপাদন

  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি : চিংড়ি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার কৃষকরা সম্প্রতি ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে, স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় এই জেলায় পানিফলের চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পতিত ও জলাবদ্ধ জমিতেও এই ফল চাষ করা যায় বলে কৃষকরা বিঘাপ্রতি প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ পাচ্ছেন।
বাজারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায় পানিফলের চাষাবাদ চলছে। চাষাবাদে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হলেও অল্প সময়ে ভালো মুনাফা পাওয়ায় চাষিরা এই ফলের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন।
কলারোয়ার পানিফল চাষি মো. ইয়াকুব্বর আলী জানান, “সাড়ে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে তিন বছর ধরে এই ফল চাষ করছি। যা খরচ হয় তার থেকে দ্বিগুণ লাভ হয়। এ বছর প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে এক লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি।” তবে তিনি ইঁদুরের উপদ্রবে ফলের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।
অন্য চাষিরা জানান, চারা গজানোর প্রায় তিন মাস পর থেকে পানিফলের ফলন শুরু হয় এবং এরপর আরও তিন মাস ধরে এই ফলন পাওয়া যায়। মোট ছয় মাসের এই সময়ে বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৭০-৮০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব। এতে চাষিরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দৈনিক ৬ ঘণ্টা কাজ করে শ্রমিকরাও সাড়ে ৩৫০ টাকা উপার্জন করতে পারছেন।
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় গত বছর ১৩৬ হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছিল, যা চলতি বছর ২৮ হেক্টর বেড়ে ১৬৪ হেক্টরে পৌঁছেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪২ হেক্টরে চাষ হয়েছিল।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম । সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় পানিফল চাষে সুদিন ফিরেছে দুই শতাধিক কৃষকের মধ্যে। মৌসুমি পানিফল স্থানীয় ভাষায় ‘পানি সিঙ্গারা’ নামে পরিচিত। এই ফল চাষ করে কিছুটা হলেও পরিবারের মধ্যে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে প্রান্তিক চাষির। উপজেলার জলাবদ্ধ পতিত জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ।প্রতিদিন ভোরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যাত্রীবাহী বাস, ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইকের মাধ্যমে বস্তায় ভরে এই পানিফল বিক্রির জন্য নিচ্ছেন জেলা সদর, যশোর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রাকযোগে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে। এ ছাড়া কলারোয়া পৌর সদরের মুরারীকটি থেকে যুগিবাড়ী পর্যন্ত যশোর-সাতক্ষীরার মাহাসড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে পানিফল বিক্রি করছে নস্থানীয় কৃষকরা। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশ শেখর দাস জানান, পানিফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৩৮ হেক্টর পতিত জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে। পানিফলের পুষ্টিরমান অনেক বেশি। কলারোয়া উপজেলার পতিত জমিতে এই পানিফলের চাষ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছে এখানকার কৃষকরা। প্রতি বছর বোরো ধান কাটার পর, জলাবদ্ধ পতিত জমি, পানি জমে থাকা ডোবাসহ খাল-বিলে এই ফলের লতা রোপণ করা হয় (জমে থাকা পানিতে)। তিনি বলেন, তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে গাছে ফল আসে। এ ফল চাষে সার-কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না।পানিফল চাষি তৌহিদুল ইসলাম, ওসমান গানি, আবুল হোসে, আব্দুল কাদের, কবিরুল ইসলামসহ অধিকাংশ কৃষকরা জানান, সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সহায়তা পেলে আরও অনেক প্রান্তিক কৃষক পানিফল চাষের সুযোগ পাবেন। ফলে একদিকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারবেন, ঠিক তেমনই গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে এমনটাই দাবি করেন এসব কৃষক। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশ শেখর দাস সাংবাদিক জুলফিকার আলীকে জানান, বর্তমানে পানিফল কৃষিতে নতুন এক সম্ভাবনাময় ফসল। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পানিফল চাষের বিস্তার ঘটাতে। যেকোনো পতিত পুকুর, ডোবা অথবা জলাশয়ে পানিফল চাষ করা সম্ভব। তুলনামূলক এর উৎপাদন খরচ কম। তিনি বলেন, চলিত বছর প্রায় ৩৮ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষ করা হয়েছে, যা আগামী বছর বৃদ্ধি পেয়ে আরও বেশি জমিতে চাষ হবে বলে তিনি মনে করেন।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম ‌প্রসঙ্গে বলেন, “গত বছরের তুলনায় চলতি বছর পানিফল চাষের পরিমাণ বেড়েছে। পানিফল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল, যা মানবদেহে ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। পানি ফলের চাষ আরও বাড়ানোর জন্য স্বল্প সুদে ঋণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট