ডেস্ক রিপোর্ট : আজ থেকে বাংলাদেশের ভোটাররা নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন। দিনের ভোট রাতে হবে না, আর মৃত কেউ ভোট দিতে পারবে না। এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, যে আপিল বিভাগ আগে যে জাজমেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল ঘোষণা করেছিল তা সর্বসম্মতিক্রমে বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোর্টে সাবমিশন করেছি যে আমাদের কাছে একটি লিগাল প্রিন্সিপল রয়েছে, যা হলো ‘অ্যাপ্লিকেবিলিটি অফ ল’। সুপ্রিম কোর্টের জাজমেন্ট মূলত আর্টিকেল ১১১-এর অধীনে দেওয়া হয়। কোনো জাজমেন্ট স্বাভাবিকভাবে রেট্রোসপেকটিভ হয়, যদি তা স্পষ্টভাবে প্রসপেকটিভ না বলা থাকে। আপিল বিভাগ এটি প্রসপেকটিভ ইফেক্ট দিয়েছে, অর্থাৎ আগামী সংসদ ডিজলভ হওয়ার পর থেকে রায় কার্যকর হবে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন হয়েছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানে ১৯৭৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংযোজিত হয়েছিল। আপিল বিভাগের এই রায়ে তা সংবিধানিক হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি সহায়ক ব্যবস্থা। আজ থেকে জনগণ নিশ্চিন্তভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারবে। ভোটকাল দিনে অনুষ্ঠিত হবে এবং মৃত ব্যক্তির ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। এটি গণতান্ত্রিক মহাসড়কের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
তিনি উল্লেখ করেন, পুরনো পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হলেও, তা আপিল বিভাগে এখনো পেন্ডিং। ‘আজকের রায় মূলত ১৩তম সংশোধনী সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে। এটি কোনোভাবে পঞ্চদশ সংশোধনী বা অন্য কোন বিষয়কে ক্লাশ করবে না। আপিল বিভাগের এই রায় অতীতের হাইকোর্ট জাজমেন্টের ওপর প্রভাব ফেলবে না, এবং এটি পরবর্তী রিভিউ বা অন্য জাজমেন্টে পুনঃপর্যালোচনার সুযোগও সীমিত করবে।’
এছাড়া, তিনি বলেন, এই রায় গণতন্ত্রের স্বার্থে সুপরিকল্পিত। ফিফটিন অ্যামেন্ডমেন্ট সংক্রান্ত মামলা যদি আপিল বিভাগে প্রত্যাখ্যাত হয়, সেক্ষেত্রে তা নতুন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগোবে। তবে আপিল বিভাগের আজকের রায় একটি ‘past and closed chapter’, যা নির্বাচনের জন্য নির্দিষ্ট কাঠামো প্রদান করছে।
এভাবে, বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হওয়ায় আগামী নির্বাচনে ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন।