বিশেষ প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় এবার গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে বাম্পার ফলনে লাভের আশা করছে কৃষক। জেলায় চলতি মৌসুমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টমেটোর উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। জেলার কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়াচ্ছেন এবং স্বল্প সময়ে লাভজনক ফলন অর্জন করছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিবর্তন পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক গরম, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ত পানি এবং রোগবালাই চাষিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সাতক্ষীরার কৃষকরা উঁচু বেড, গভীর নলকূপের সেচ, পলিথিন শেড ও হাইব্রিড জাতের বীজ ব্যবহার করে এসব ঝুঁকি কাটিয়ে উঠেছেন। কলারোয়া ও তালা উপজেলার মাঠগুলোতে এখন চোখে পড়ে সাদা পলিথিন শেডে সারি সারি সবুজ টমেটো গাছ। ড্রেনের কারণে বর্ষার পানি জমছে না, গাছ রোগবালাইমুক্ত থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ী) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সাতক্ষীরায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছিল ১৩২ হেক্টর জমিতে, আর চলতি বছর তা বেড়ে ১৫২ হেক্টর হয়েছে। দেশে উৎপাদন কমে যাওয়ায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২২ হাজার ৪১৬ মেট্রিক টন টমেটো আমদানি হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
কলারোয়া উপজেলার চাষি আলি রশিদ বলেন, এক বিঘা জমিতে খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা হলেও বিক্রি হয় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মতো। খরচ বাদ দিয়েও লাভ দ্বিগুণ। শুধু কৃষক নয়, ক্ষেতের শ্রমিকরাও উপকৃত হচ্ছেন, যা তাদের সংসারের আয় বাড়াচ্ছে।
কৃষক রবিউল মোড়ল বলেন, পলিথিন শেড ব্যবহার করার ফলে গাছ রোগবালাইমুক্ত থাকে। বাজারে অসময়ে টমেটোর চাহিদা বেশি হওয়ায় কেজি প্রতি দামও ভালো, কৃষকের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা আসে।
স্থানীয় শ্রমিক সামছুল আলম বলেন, টমেটো চাষের কাজ আমাদের সংসারের আয় বাড়াচ্ছে। আগে মাছ চাষের পাশাপাশি কাজ সীমিত ছিল, এখন টমেটো চাষে নতুনভাবে আয়ের সুযোগ পাচ্ছি।
তালা উপজেলা নগরঘাটা গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, তার দুই বিঘা জমিতে এবার টমেটো চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম বেশি হওয়ায় তিনি লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
মিঠাবাড়ী গ্রামের কৃষক আবেদ আলী জানান, এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। আশা করছেন এবার গতবছরের তুলনায় বাজার মূল্য বেশি থাকায় লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম এনামুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে কলারোয়া উপজেলায় ৯৩ হেক্টর জমিতে বারি-৮ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। এই জাতটি স্বাদে ভালো, টেকসই এবং বাজারে চাহিদাসম্পন্ন। কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন এবং চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তিনি জানান, বর্তমানে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি টমেটোর দাম ৭৬ থেকে ৭৭ টাকা। এক বিঘা জমিতে পলিথিন, শ্রম ও সার বাবদ গড়ে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিক্রি হয় প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায়। আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার লাভে মানুষ এই চাষে ক্রমে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন কৃষি উৎপাদনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, অনিয়মিত বৃষ্টি, লবণাক্ততা এবং রোগবালাইয়ের প্রকোপে টমেটোসহ মৌসুমি ফসলের উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়ে। তবে কৃষকরা দ্রুত অভিযোজন সক্ষমতা দেখিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়োপযোগী চাষাবাদ ক্যালেন্ডার, ড্রিপ সেচ ব্যবস্থা, পলিথিন শেড, উঁচু বেডে চাষ এবং লবণাক্ততা-সহনশীল জাত ব্যবহারের মাধ্যমে এই অঞ্চলে টমেটোর উৎপাদন টেকসইভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে উৎপাদনে ঝুঁকি বেড়েছে। তবে কৃষকরা সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে, আমাদের পরামর্শ ও প্রযুক্তি সহযোগিতা গ্রহণ করে ফলন বাড়াচ্ছেন। কলারোয়া ও তালা উপজেলায় ফলন বিশেষভাবে ভালো হয়েছে। এভাবে উৎপাদন রক্ষা করা সম্ভব, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো যায় এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় এবার গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে বাম্পার ফনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে টমেটো চাষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।’
সাতক্ষীরায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে এবার নজিরবিহীন ফলন লক্ষ্য করা গেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টমেটোর উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানির ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। তবুও স্থানীয় কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়াচ্ছেন এবং স্বল্প সময়ে লাভজনক ফলন অর্জন করছেন।
অস্বাভাবিক গরম, অতিবৃষ্টি, লবণাক্ত পানি এবং রোগবালাই চাষিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সাতক্ষীরার কৃষকরা উঁচু বেড, ড্রিপ সেচ, পলিথিন শেড ও হাইব্রিড জাতের বীজ ব্যবহার করে এসব ঝুঁকি কাটিয়ে উঠেছেন। কলারোয়া ও তালা উপজেলার মাঠগুলোতে এখন চোখে পড়ে সাদা পলিথিন সেডে সারি সারি সবুজ টমেটো গাছ। ড্রেনের কারণে বর্ষার পানি জমছে না, গাছ রোগবালাইমুক্ত থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সাতক্ষীরায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছিল ১৩২ হেক্টর জমিতে, আর চলতি বছর তা বেড়ে ১৫২ হেক্টর হয়েছে। দেশে উৎপাদন কমে যাওয়ায় চলতি ২০২৪–২৫ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২২ হাজার ৪১৬ মেট্রিক টন টমেটো আমদানি হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
কলারোয়া উপজেলার চাষি আরমান হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে খরচ প্রায় দুই লাখ টাকা হলেও বিক্রি হয় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মতো। খরচ বাদ দিয়েও লাভ দ্বিগুণ। শুধু কৃষক নয়, ক্ষেতের শ্রমিকরাও উপকৃত হচ্ছেন, যা তাদের সংসারের আয় বাড়াচ্ছে।
আরেক কৃষক শাহিনুর রহমান,পলিথিন শেড ব্যবহার করার ফলে গাছ রোগবালাইমুক্ত থাকে। বাজারে অসময়ে টমেটোর চাহিদা বেশি হওয়ায় কেজি প্রতি দামও ভালো, কৃষকের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা আসে।
স্থানীয় শ্রমিক হযরত আলী বলেন, টমেটো চাষের কাজ আমাদের সংসারের আয় বাড়াচ্ছে। আগে মাছ চাষের পাশাপাশি কাজ সীমিত ছিল, এখন টমেটো চাষে নতুনভাবে আয়ের সুযোগ পাচ্ছি।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস. এম. এনামুল ইসলাম বলেন, এ বছর কলারোয়ায় ৯৩ হেক্টর জমিতে বারি-৮ জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়েছে। এই জাতটি স্বাদে ভালো, টেকসই এবং বাজারে চাহিদাসম্পন্ন। কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন এবং চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি টমেটোর দাম ৭৬ থেকে ৭৭ টাকা। এক বিঘা জমিতে পলিথিন, শ্রম ও সার বাবদ গড়ে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিক্রি হয় প্রায় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকায়। আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার লাভে মানুষ এই চাষে ক্রমে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন কৃষি উৎপাদনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, অনিয়মিত বৃষ্টি, লবণাক্ততা এবং রোগবালাইয়ের প্রকোপে টমেটোসহ মৌসুমি ফসলের উৎপাদন ঝুঁকির মুখে পড়ে। তবে কৃষকরা দ্রুত অভিযোজন সক্ষমতা দেখিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়োপযোগী চাষাবাদ ক্যালেন্ডার, ড্রিপ সেচ ব্যবস্থা, পলিথিন শেড, উঁচু বেডে চাষ, এবং লবণাক্ততা-সহনশীল জাত ব্যবহারের মাধ্যমে এই অঞ্চলে টমেটোর উৎপাদন টেকসইভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করেন, এসব উদ্ভাবনী পদ্ধতির সফল প্রয়োগ শুধু সাতক্ষীরাতেই নয়, দেশের অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চলেও কৃষিতে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে উৎপাদনে ঝুঁকি বেড়েছে। তবে কৃষকরা সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে, আমাদের পরামর্শ ও প্রযুক্তি সহযোগিতা গ্রহণ করে ফলন বাড়াচ্ছেন। কলারোয়া ও তালা উপজেলায় ফলন বিশেষভাবে ভালো হয়েছে। এভাবে উৎপাদন রক্ষা করা সম্ভব, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানো যায় এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।