ডেস্ক রিপোর্ট : ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথে। সেই যাত্রায় তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞান ও দক্ষতায় গড়ে তুলতে শুরু হয়েছে আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ সিজন থ্রি। প্রতিপাদ্য – “প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যৎকে শক্তিশালী করা।” এ আয়োজন শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি জগতে সম্পৃক্ত করা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও নেতৃত্বগুণ বিকাশের এক মহাযাত্রা। দেশব্যাপী অংশ নিচ্ছে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা
এই অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে পারবে দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, পলিটেকনিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করা যাবে অনলাইনে আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে অথবা জেলা টিম ও অ্যাম্বাসেডর টিমের সহায়তায়।
রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হয়েছে তিনশত টাকা (আর্লি বার্ড), পরে তা হবে পাঁচশত টাকা। রেজিস্ট্রেশন শেষে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রোফাইল তৈরি করে তথ্য, ছবি ও একাডেমিক তথ্য যুক্ত করতে পারবে। রেজিস্ট্রেশনের সর্বশেষ তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২৫। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবুল হোসেন ইমেইল বার্তায় এ খবর জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানান- তরুণদের হাতে নেতৃত্ব প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গঠিত হচ্ছে একটি অ্যাম্বাসেডর টিম, যারা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনে সহায়তা করবে এবং সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একজন লিডার ও ১-২ জন কো-লিডার নিয়ে টিমটি গঠিত হবে। তারা ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে আইসিটি অলিম্পিয়াড সম্পর্কে ব্রিফিং দেবে, রেজিস্ট্রেশন বুথ পরিচালনা করবে এবং সেমিনার বা ফেস্ট আয়োজন করবে। অ্যাম্বাসেডরদের জন্য রয়েছে আইডি কার্ড, ব্যাজ, বাটন, নাস্তার খরচ ও নানা সুযোগ-সুবিধা। তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে জেলা টিম।
মেন্টর ও আইসিটি ক্লাবের সম্পৃক্ততা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আইসিটি শিক্ষক বা প্রযুক্তিপ্রেমীরা মেন্টর হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। মেন্টর রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ ফ্রি এবং এতে অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকবে। মেন্টররা আইসিটি অলিম্পিয়াডের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দেবেন।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ক্লাব রয়েছে, তারা অলিম্পিয়াডের নেটওয়ার্ক ক্লাব-এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এসব ক্লাবের সদস্যদের জন্য থাকবে আইডি কার্ড, ব্যাজ, অনলাইন ইএমআই সার্ভিস এবং বিনামূল্যে এক লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা (হেলথ ইন্স্যুেরন্স) সুবিধা। অ্যাম্বাসেডরদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ পুরস্কার ও স্বীকৃতি-
ই-সার্টিফিকেট, ব্যাজ ও রিস্টব্যান্ড
অনলাইন ও অফলাইন ট্রেনিং সার্টিফিকেট
এক্সক্লুসিভ অনলাইন সামিটে অংশগ্রহণের সুযোগ
সেরা ১৫ জন অ্যাম্বাসেডরকে ক্রেস্ট, মেডেল, স্মার্টওয়াচ, স্মার্টফোন ও স্থানীয় ভ্রমণের সুযোগ
সেরা টিমকে দেওয়া হবে “বেস্ট অ্যাম্বাসেডর টিম অ্যাওয়ার্ড”
এই পুরস্কারগুলো তরুণদের শুধু অনুপ্রাণিতই করছে না, বরং তাদের নেতৃত্ব বিকাশের নতুন দ্বারও খুলে দিচ্ছে।
প্রতিযোগিতার ধাপ ও বিষয়সমূহ
আইসিটি অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে চারটি ধাপে-
১. সিলেকশন রাউন্ড (অনলাইন)
২. কোয়ার্টার ফাইনাল (অনলাইন)
৩. সেমিফাইনাল (অনলাইন)
৪. গালা রাউন্ড (অফলাইন)
অলিম্পিয়াডে রয়েছে ১৫টি সেগমেন্ট-
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, প্রোগ্রামিং, সাইবার সিকিউরিটি, ব্লকচেইন, ই-কমার্স, ইন্টারনেট অব থিংস, ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড রিয়েলিটি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, টেক উদ্যোক্তা তৈরি ও ফ্রিল্যান্সিংসহ আরও নানা বিষয়ে প্রতিযোগিতা হবে।
অংশগ্রহণকারীদের সুযোগ-সুবিধা
অংশগ্রহণকারীদের জন্য থাকছে-
বিনামূল্যে সফট স্কিল কোর্স
আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেট
ইন্টার্নশিপ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম
ক্যারিয়ার গাইডেন্স ও স্কলারশিপ
টেকনোলজি সেমিনার ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ
এসব সুবিধা শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ও পেশাজীবন উভয় ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধ করবে।
সাতক্ষীরাসহ সারাদেশের প্রতিটি জেলায় চলছে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে জেলা টিমের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা টিমের ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর কো-অর্ডিনেটর মোঃ সাইমুন ইসলাম বলেন, “আমরা চাই সাতক্ষীরার প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন প্রযুক্তির মূলধারায় আসে। এই অলিম্পিয়াড শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি শেখার, নেতৃত্ব দেওয়ার এবং নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার সুযোগ।”
যোগাযোগ: মোঃ সাইমুন ইসলাম – ০১৬০৩-৩২০২০৮। হোয়াটসঅ্যাপ: ০১৯২০-৬০৬৫০১। ওয়েবসাইট: রপঃড়ষুসঢ়রধফনধহমষধফবংয.পড়স
সাইমুন ইসলাম বলেন- প্রযুক্তি আজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক ও উদ্ভাবনী সমাজব্যবস্থার উপর দাঁড়িয়ে। আইসিটি অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ সেই পরিবর্তনের এক প্রাণবন্ত প্রতীক- যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী হয়ে উঠতে পারে একেকজন “প্রযুক্তি দূত”।