ডেস্ক রিপোর্ট : ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রবেশের তথ্য জানিয়েছে বিজিবি। যা স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের আইন-শৃঙ্খলার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, অস্ত্র চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজিবির দেওয়া তথ্য মতে, গত চার মাসে মহেশপুর সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে মোট ৭টি পিস্তল (৬টি বিদেশি, ১টি দেশি) এবং ২১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গা, রায়পুর ও কচুয়ারপোতা সীমান্তকে অস্ত্র চোরাচালানের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই রুটগুলো ব্যবহার করে অস্ত্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে অস্ত্র চোরাচালান হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে।
পূর্বে মহেশপুর সীমান্ত মূলত মানব ও স্বর্ণ পাচারের জন্য ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে এটি অস্ত্রের প্রধান রুট হয়ে উঠেছে। চোরাকারবারিরা সীমান্তের ওপার থেকে সুবিধাজনক সময়ে অস্ত্র এনে মজুদ করে এবং পরে সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়।
এদিকে অস্ত্র চোরাচালানে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এবং বিজিবির সোর্সদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি মহেশপুর সীমান্ত থেকে অস্ত্র নিয়ে বাগেরহাটে বিক্রির সময় ঝিনাইদহের ১১ যুবককে আটক করে পুলিশ।
তাদের কাছ থেকে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন, ৯ রাউন্ড গুলি এবং অস্ত্র বিক্রির ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ভারত থেকে মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র এনে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে।
মহেশপুরের মানবাধিকারকর্মী আব্দুর রহমান জানান, প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে সীমান্তের ওপার থেকে প্রতিনিয়ত অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আসছে। যা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য চরম আতঙ্কের বিষয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের আরো কঠোর হতে হবে।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সীমান্ত সুরক্ষায় আমরা কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে। বিশেষ করে অস্ত্র চোরাচালানের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স-নীতি অবলম্বন করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সম্প্রতি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং অস্ত্র চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’