1. mesharulislammonir1122@gmail.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন
  2. info@www.sangjogprotidin.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩১ অপরাহ্ন

বেতগ্রাম-কয়রা ভায়া পাইকগাছা মহাসড়কের কাজ ৫ বছরেও শেষ হয়নি

  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট : খুলনার বেতগ্রাম-কয়রা ভায়া তালা-পাইকগাছা আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন (সড়ক প্রসস্ত ও বাঁক সরলীকরণ) প্রকল্পে কাজ শেষ না করে মাঝ পথে পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাইডে ফিরে ইতোমধ্যে পূণরায় কাজ শুরু করেছে। চারটি উপজেলার উপর দিয়ে বাস্তবায়নাধীন সড়কের কয়রা অংশে কাজ করতে দেখা গেছে তাদের। প্রকল্পের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে অন্তত দুই দফায় তিন বছর মেয়াদ ও প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যায় বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৬৪ শতকরা কাজের অগ্রগতি দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ১৭৮ কোটি টাকা উত্তোলনের পর সটকে পড়েছে তারা।
সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ’র) আওতায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ ৩৩৯ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা ব্যায়ে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায় ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এর আগে ওই বছরের ২১ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। দুই বছর মেয়াদে ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটি শেষ করার কথা ছিল। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ নানা জটিলতায় তিন দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ে আরো তিন বছর। পাশাপাশি ব্যায় বরাদ্দ বেড়েছে আরো প্রায় ৩৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ঝুঁকিপূর্ণ ৩৪টি বাঁক সরলীকরণ ও তার জন্য জমি অধিগ্রহন। অথচ নানা সংকট দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাঁকগুলোর অধিকাংশই সোজা না করে খোঁড়া-খুঁড়িতেই সময় পার করেছে সাড়ে চার বছর। এরপর ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদ ও ব্যায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ৩৭৯ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা করা হয়। তবে কাজের ধীর গতির কারণে এক প্রকার থমকে ছিল কাজ। এক পর্যায়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে মালামাল নিয়ে কাজের সাইড থেকে পালিয়ে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরপর মিডিয়ায় এনিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়ে সওজ’র।
এব্যাপারে মোজাহার এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, তারা ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করে পূণরায় কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে সড়কের কয়রা উপজেলা অংশে অসমাপ্ত ৭ কি:মি: রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। পর্যায়ক্রমে পাইকগাছা অংশের কাজও দ্রুত শেষ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, খুলনার কয়রা-পাইকগাছা ও ডুমুরিয়ার বেতগ্রাম পর্যন্ত ৬৪ কি:মি: দৈর্ঘ্যরে সড়কটি শেষ হয়েছে খুলনা-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের বেতগ্রাম অংশে। সেখান থেকে খুলনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় সড়কটির ‘যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটির ৬৪ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অর্ধেকের বেশি বিল দেয় সওজ। যদিও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ তার উল্টো।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, এখন পর্যন্ত সড়কের কোথাও মানসম্মত কাজ হয়নি। অধিকাংশ জায়গায় পুরনো কার্পেটিংয়ের ওপর নতুন করে কার্পেটিং করা হয়েছে যার, অধিকাংশ স্থানে দেখা দিয়েছে ফাঁটল।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত পতিত সরকারের সাবেক এক প্রভাবশালী এমপির আস্থাভাজন হিসেবে কাজটি বাগিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি শুরুতেই নানা অনিয়ম-দূর্নীতির মধ্যে নিম্নমানের সামগ্রীতে কাজ শুরু করে। এরপর শুরু হয় স্থানীয় এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুর অবৈধ হস্তক্ষেপ। ফলে বিশেষ সুযোগ নিয়ে কাজ না করেও অর্ধেকের বেশি বিল তুলে নেয় ঠিকাদার। এদিকে যথেচ্ছা সরকারি অর্থ লোপাট হলেও কাজের কাজ তো হয়নি। উপরন্তু সড়কের বিভিন্ন অংশ খুঁড়ে রাখায় গত ৫ বছরে সড়কটিতে চলাচল করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি বেড়েছে বহুলাংশে। বিশেষ করে চলতি বর্ষা মৌসুমে পানি কাঁদায় গর্তগুলোর প্রসারতা বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্ট খাঁদে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কের বাঁক এলাকাগুলো। প্রায় প্রতিদিনই এসব এলাকায় ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজে উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে ছিল সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ, ঝুঁকিপূর্ণ ৩৪টি বাঁক সরলীকরণ, কালভার্ট নির্মাণ, ১০০ মিটার নদী শাসন, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।সর্বশেষ সরজমিন দেখা গেছে, ৩৪টি বাঁক সরলীকরণ কাজ অসমাপ্ত রেখে সড়কের কিছু স্থানে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়েছে। নির্মাণ শেষ হওয়া কার্পেটিংয়ের বিভিন্ন স্থানে ঢালাই উঠে বড় বড় গর্ত দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ স্থান ভারী যানবাহনের চাকায় ডেবে গেছে। সড়কের দুই পাশে গাইডওয়াল, প্যালাসাইডিংও মাটির চাপে বেঁকে গেছে। কয়রা সদর থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত ৩৪টি বাঁকে কাজ ফেলে রাখায় দু-তিন কিলোমিটার পর পর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালকদের। বাঁকের স্থানগুলোয় পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এরপর অতিবৃষ্টির পানি জমে সেখানে তৈরি হয়েছে অবর্ণনীয় দূর্ভোগ।
এরআগে মানসম্মত কাজ না হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল দেয়ার বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে তারা তিনটি ওয়ার্ক প্যাকেজের (ডব্লিউপি) কাজ যথাযথভাবে করেছে। সে হিসাবে আগের যিনি প্রকল্প পরিচালক ছিলেন, তিনি অর্থছাড়ের সুপারিশ করেন। সর্বশেষ মোজাহার এন্টারপ্রাইজের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
সর্বশেষ সওজের খুলনা নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক জানান, সময়মত কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, নিবন্ধন বাতিলসহ কালো তালিকাভূক্তির সুপারিশ করা হয়। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সময় বৃদ্ধির আবেদন করে কাজ শুরু করেছে।

 

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট