ডেস্ক রিপোর্ট : পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ছুরিকাঘাতে নিহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়। গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা মাত্রা সেটিতে ঘিরে ঘরেন সহপাঠীরা।
ফ্রিজিং গাড়িটির সাইরেন থামতেই নেমে আসে নিস্তব্ধতা। মুহূর্তের মধ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন সহপাঠীরা। কারও চোখে জল, কেউ নিঃশব্দে তাকিয়ে ছিলেন সাদা কাপড়ে মোড়া প্রিয় সহপাঠীর নিথর দেহের দিকে। এ সময় অন্যরকম এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সেখানে বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফনের জন্য মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে।
গত শনিবার আরমানিটোলার মাহুতটুলিতে পানির পাম্প গলির নুর বক্স লেনের একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জুবায়েদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জুবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও জুবায়েদ হোসেনের সহপাঠীদের তথ্যমতে, জুবায়েদ ওই ভবনের একটি বাসায় এইচএসসির এক ছাত্রীকে পড়াতেন। অন্যান্য দিনের মতো রোববার সন্ধ্যায় সেখানে পড়াতে যান তিনি। পরে ছয় তলাবিশিষ্ট ওই ভবনের তৃতীয় তলার সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
গায়ে নিজের নামসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোসংবলিত জার্সি দেখে স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোন দেন।
খবর পেয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সেখানে উপস্থিত হন। ফরেনসিক টিম আসার পর রাত ১১টার দিকে জুবায়েদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) পাঠায় পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ছাত্রীকে থানায় নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।
খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নুর বক্স লেনের ওই বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলকারীরা বাহাদুর শাহ পার্ক, শাঁখারীবাজার মোড়, জজকোর্ট, রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতীবাজার মোড়ে এসে সড়ক অবরোধ করেন।