ডেস্ক রিপোর্ট : প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান শুরু করেছে মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন। আজ বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও সমুদ্র উপকূলে চোরাই জেলেদের বিরুদ্ধে অভিযান ও টহল কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা। একইসঙ্গে জেলেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও আলোচনা সভাও করেছে। মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য মা ইলিশ রক্ষায় সকলকে সরকারী আইন মেনে চলারও আহবান জানান কোস্ট গার্ড সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে মোংলা সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীর ত্রিমোহনায় এক সংবাদ সম্মেলনে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লে. কমান্ডা র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কোস্ট গার্ড জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের সুবিশাল সমুদ্র, উপকূলীয় এবং সুন্দরবন সংলগ্ন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। পাশাপাশি বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ, মা ইলিশ সংরক্ষণ এবং নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কালীন কঠোর নজরদারী এবং প্রতিনিয়ত কোস্ট গার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাই মাছের বংশ বৃদ্ধির করতে মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কোস্টগার্ড সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সুন্দরবনের নদ-নদী ও সমুদ্র উপকূলে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি জেলেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও আলোচনা সভার আয়োজন এবং ইলিশ ধরা সকল জেলেদের সরকারের আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া বাগেরহাট জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌবাহিনী, পুলিশ ও বন বিভাগ সহ সকল প্রশাসন মা ইলিশ সংরক্ষণে সক্রিয় অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কোস্ট গার্ডের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্যজীবীদের সহায়তা প্রত্যাশা করে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার আবরার হাসান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আজকের সংরক্ষণই আগামী দিনের প্রাচুর্য। মৎস্যজীবী ভাইদের নিকট আমাদের আহবান এবং অনুরোধ, আসুন, সবাই মিলে কোস্ট গার্ডকে মা ইলিশ রক্ষায় সহায়তা করার মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে সহায়তা করি। তা হলেই আমাদের বভিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি মৎস্য সম্পদের ভান্ডার উপহার দিতে পারবো। তাই আপনার-আমার বেঁেচ থাকার সহায়তার জন্য বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দায়ীত্বাধীন সুন্দরবনের উপকূলীয় নদ-নদী এলাকার মৎস্য অভায়রণ্যগুলোতে মা ইলিশ রক্ষায় সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখাবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগর, সুন্দরবন, পশুর চ্যানেল ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও খালে ট্রলার ও ফিশিং বোটের মাধ্যমে মাছ শিকার করার কারণে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ধ্বংস, মাছের প্রজনন ব্যাহত, সুন্দরবনের গাছপালা ও পোনামাছ ধ্বংস হয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য শূন্যতার আশঙ্কা তৈরি করছে। অবৈধ কারেন্টজাল, বিষ দিয়ে মাছ শিকার, ট্রলার, ট্রলিং ও ফিশিং বোটের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চলমান থাকায় এর ব্যবহার অধিকাংশে কমেছে। কোস্ট গার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকলে সমুদ্র ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে মাছের প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানায় এ কর্মকর্তা।