ডেস্ক রিপোর্ট : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমের ভূয়সী প্রশংসা করেছে ঢাকার ফিলিস্তিনি দূতাবাস।
আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ফিলিস্তিনি দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী, শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে গর্বের সাথে ধন্যবাদ জানাই, যিনি গ্লোবাল সুমুদ মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন। গাজায় ইসরাইলের অবৈধ অবরোধ ভাঙার এই ঐতিহাসিক মিশনে অংশ নেওয়া প্রথম বাংলাদেশি তিনি। ন্যায়বিচারের জন্য তার নির্ভীক কণ্ঠস্বরের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এই সাহসী অভিযানে অংশগ্রহণ করায় বাংলাদেশে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাস তাকে সম্মান ও ধন্যবাদ জানিয়েছে।
গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম গাজা ফ্লোটিলায় যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন। ঢাকার শুক্রাবাদে দৃকপাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের নীরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে পরিচালিত ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
গ্লোবাল মিডিয়া ফ্লোটিলাতে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে গণহত্যা চলছে। ইসরায়েল ও আমেরিকা একসঙ্গে ফিলিস্তিনে, গাজায় মানুষ খুন করছে। তার সঙ্গে পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ যুক্ত; তারাও সহযোগিতা করছে এবং তারাও এতে অংশীদার।’
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইতালির উদ্দেশে রওনা হন শহিদুল আলম। এরপর গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালির ওট্রান্টো থেকে ফ্লোটিলার বৃহত্তম জাহাজ ‘কনসায়েন্স’-এ যোগ দেন তিনি।
যোগ দেওয়ার পর এক বার্তায় তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে গাজায় যাচ্ছি। কিন্তু বাংলাদেশের সকল মানুষের ভালোবাসা আমার সাথে বহন করছি। গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা। এই সংগ্রামে যদি আমরা পরাজিত হই, তাহলে মানবতা নিজেই পরাজিত হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, নৌবহর ইসরাইলের ঘোষিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে যা গাজার উপকূল থেকে প্রায় ২২৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১২১ নটিক্যাল মাইল দূরে। আগেরবারের ফ্লোটিলাগুলোকে এখানেই আটকানো বা আক্রমণ করা হয়েছিল।
ইসরায়েল এবারও তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে তেমন পদক্ষেপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আয়োজকরা। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ নৌবহর আটকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের মতোই নৌবহরের শত শত কর্মীকে আটক করে তীরে আনার পর নির্বাসিত করা হতে পারে। কিছু জাহাজ সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অভিযান বুধবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ইহুদিদের পবিত্রতম দিন ইয়ম কিপ্পুরের সময় শুরু হতে পারে।