1. mesharulislammonir1122@gmail.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন
  2. info@www.sangjogprotidin.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

ভোটে গুজব রুখতে গণমাধ্যমের ‘অবাধ স্বাধীনতা’ চান সাংবাদিকরা

  • প্রকাশিত: সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপে অংশ নিয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিকরা গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা দাবি করেছেন। মিডিয়াকে অবাধে স্বাধীনতা দিলে ভোটকে কেন্দ্র করে কোনো গুজব ছড়াবে না বলে মনে করেন তারা।
আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।
সংলাপে অংশ নিয়ে একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান শফিক আহমেদ বলেন, সিইসি ও কমিশনারদের মর্যাদা মন্ত্রীর ওপরে রাখতে হবে। প্রশাসনের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিত। বিনা ভোটের প্রার্থী নির্বাচন ঠেকাতে একক প্রার্থীর আসনে পুনঃভোটের ব্যবস্থা এবং মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধে একজন প্রার্থীকে একটিমাত্র মনোনয়ন দেওয়ার বিধান করতে হবে।
এই সাংবাদিক বলেন, গণমাধ্যমে ভোটের খবর সংগ্রহে নীতিমালা সহায়ক নয়। এতে কারচুপির সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পারি না। তাই সহায়ক নীতিমালা তৈরি ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
যমুনা টিভির জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসন ও পুলিশের দায়-দায়িত্ব ইসিকে নিতে হবে। মাঠের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয় কাজ করে, তারা ভোটের পর ক্ষমতাসীন দলের রোষানলে পড়তে পারেন—এমন ধারণা পরিবর্তন করতে হবে।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোটকে আমরা যুদ্ধ না, উৎসব হিসেবে দেখতে চাই। কিন্তু বাস্তবে মাঠ নিয়ন্ত্রণ করা ভীষণ কঠিন হয়ে পড়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে সাফল্য আসবে না।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক মোস্তফা আকমল বলেন, নির্বাচনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার। এক মিনিটেই ভুয়া ছবি তৈরি করা যায়, প্রার্থীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা সম্ভব। তিনি ভোটার তালিকা হালনাগাদে ত্রুটি দূর করা ও ফলাফল দ্রুত প্রকাশের আহ্বান জানান।
গ্লোবাল টিভির সিএনই ফেরদৌস মামুন বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা কমেছে। মূলধারার গণমাধ্যম নয়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মই গুজবের বড় উৎস—এটা ঠেকাতে ইসিকে কাঠামো তৈরি করতে হবে।
চ্যানেল আইয়ে চিফ নিউজ এডিটর জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, সঠিক তথ্য দ্রুত প্রকাশ করা গেলে গুজব কমবে। আমরা মাঠে যাই বিশৃঙ্খলার খবর পেতে। তাই ইসি যত দ্রুত ফলাফল দেবে, তত দ্রুত আমরা প্রচার করতে পারব।
জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহারে কমিশনের কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কারণ নির্বাচনে এগুলোর অপব্যবহার দেখা যায়।
ডিবিসি টিভির সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, সংস্কার কমিশন অনেক কাজ এগিয়ে দিয়েছে। এজন্য আপনারা অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ দেরি করছেন। কিন্তু আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম সেগুলো আমলে না নিয়েই যদি নীতিমালা করেন তাহলে তো আজকের এই সংলাপ ফলপ্রসূ হলো না। কাজেই নীতিমালা সংশোধন করা উচিত।
এই সাংবাদিক বলেন, অভ্যুত্থানের পর মানুষ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে। সেটা করতে পারবেন কি না এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। আপনারা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন, আমরা ভুল-ত্রুটি ধরার চেষ্টা করব। কিন্তু সেটা আপনাদের আমলে নিতে হবে। আমরা অতীতেও দেখেছি গণমাধ্যমে প্রতিপক্ষ ভাবা হয়। তাই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিলে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারবেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যদি আমলে নিয়ে প্রতিপক্ষ ভাবেন তাহলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
জাহিদ নেওয়াজ বলেন, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য গোপন করা হয়, ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। হলফনামা যেটা দিল আমরা জানি ভুয়া, কিন্তু ইসি আর সেটা তদন্ত করে দেখল না, সেটা হলে তো আর হলফনামা দেওয়ার দরকার নেই। স্যোশাল মিডিয়ার বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
এটিএন নিউজের হেড অব ইনপুট শহিদুল আজম বলেন, নিবন্ধিত গণমাধ্যম নিয়ম মেনে চলে, কিন্তু ইউটিউব বা মোবাইলভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে খবর ছড়ানো ঠেকানো কঠিন। তাই ইসির তথ্য শাখাকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, যা চাপিয়ে রাখা যাবে না, সেটি উন্মুক্ত করাই ভালো। তাহলে সন্দেহ থাকবে না।
জিটিভির বার্তা প্রধান গাউসুল আজম বিপু বলেন, ফ্যাসিবাদী সময়ে নির্বাচনি কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে। তিনি বলেন, রাতের ভোটে যারা সিল মেরেছিল তারা সরকারি কর্মকর্তা—তাদের পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হলে আস্থা ফেরানো কঠিন হবে।
দীপ্ত টিভির সিএনই এসএম আকাশ বলেন, গুজব রুখতে মিডিয়াকে অবাধ করে দিতে হবে। মিডিয়া মুখ ফিরিয়ে নিলে আপনাদের অনেক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। এজন্য নীতিমালা সংশোধন করতে হবে। এআই মোকাবেলায় ফ্যাক্ট চেকিং টিম গঠন করা যেতে পারে। এটা আমাদের দিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রচার করতে পারি। এতে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেল করা যাবে।
সময় টিভির জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জনি বলেন, গুজব তৈরি হলে সাথে সাথে কমিশনকে তাক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। তখনই জানাতে হবে। সেটা কমিশনকে সঙ্গে সঙ্গে মূল ধারার গণমাধ্যমকে এনশিউর করতে হবে।
নিউজ২৪এর হেড অব নিউজ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। ভোট মানেই এক সময় ফ্যাস্টিভ মুভ ছিল। ধীরে ধীরে এটা রক্তক্ষয়ী অবস্থায় চলে আসছে। শুধু কাগজ দিয়ে, আইন দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বৃত্তের বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। সুষ্ঠু নির্বাচনের সহায়ক হবে গণমাধ্যমের এমন স্বাধীনতা দিতে হবে। এতে ইসিরও লক্ষ্য পূরণ সহজ হবে।
বৈশাখী টিভির বার্তা প্রধান কবির সুমন বলেন, নির্বাচনের ফলাফল পেতে যদি আমাদের দেরি হয় তাহলে আমাদের গুজব ডালপালা বাড়তে পারে। তাই আমার সুনির্দিষ্ট দাবি, যারা জনসংযোগের দায়িত্বে আছেন তারা কোনো সেল করে দিতে পারেন কি না। আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে যারা হেড অফ নিউজ আছেন তারা নির্বাচনের সাত দিন আগে কোনো হোয়াটসঅ্যাপ বা কোনো গ্রুপ করে দিতে পারেন কি না যেখানে তারা কোনো ইনফরমেশন দেবেন বা আমাদের কোনো ইনফরমেশন দেওয়ার থাকলে দেব।
বিটিভির বার্তা সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, আপনাদের নির্দেশনায় কাজ করব। সোশ্যাল মিডিয়া নজরদারিতে রাখতে হবে। ফেক নিউজ ছড়াবে। দ্রুত আমাদের চিহ্নিত করে জানাবেন, যাতে আমরা কাউন্টার করতে পারি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা, স্টার নিউজের হেড অফ নিউজ ওয়ালিউর রহমান মিরাজ, মাছরাঙ্গা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি নিয়াজ মোর্শেদ, আনন্দ টিভির নিউজ ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন, এটিএন বাংলার চিফ রিপোর্টার একরামুল হক সায়েম সংলাপে অংশ নেন।
সিইসি সবার আলোচনা শেষে বলেন, অনেক মূল্যবান পরামর্শ এসেছে। আমরা যতটুকু পারি আপনাদের পরামর্শ বিবেচনা করব। আপনারাদেরকে আমরা সত্যিকারের পার্টনার হিসেবে পেতে চাই। জনগণের কাছে আমাদের বার্তা একমাত্র মিডিয়াই পৌঁছাবে। আপনারা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আমরা মিডিয়াকে এক্সেস দিতে চাই। আমাদের নিয়তের মধ্যে কোনো গলদ নাই। নিয়ত একদম পরিষ্কার। মিডিয়ার জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা।
সিইসি বলেন, বিশ্বাস করেন, আমাদের মিডিয়ার এন্ট্রি রেস্ট্রিকশন করার কোনো উদ্দেশ্য কাজ করে নাই। একটা লিগ্যাল রিকোয়ারমেন্ট আছে। আমাকে একটা দেশের অ্যাম্বাসেডর চিঠি লিখেছিলেন যে, অবজারভারের (পর্যবেক্ষক) জন্য কেন আবার প্রিজাইডিং অফিসারের পারমিশন লাগবে। একই কথা আপনারা বলছেন। ইট ইজ আ লিগ্যাল রিকোয়ারমেন্ট অব আরপিও। কারণ ওই দিনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার সর্বেসর্বা। আমার ইলেকশন কমিশনের ক্ষমতা কিন্তু উনার কাছে অর্পিত। প্রিজাইডিং অফিসারই ডিসিশন মেকার। দেখেন ভোটের রুমটা অনেক ছোট। এখানে প্রিজাইডিং অফিসার, ল’এনফোর্সমেন্টের লোক থাকে, পোলিং অফিসার, এজেন্ট থাকে, অবজারভার থাকে, সাংবাদিকরা থাকে। এখন সবাই যখন একটা রুমে লাইভ করার জন্য ঢুকে পড়ে তাহলে স্পেসের একটা সমস্যা হতে পারে। এই ম্যানেজমেন্টটাই প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে ন্যস্ত আছে। তাই এটা কোনো পারমিশন না, এটাকে ইনফর্ম করার মতো মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের যে শঙ্কা, আপনাদের পারমিশন দেওয়া হবে না…উই উইল এড্রেস দিস। আর অবজারভারদেরও পারমিশন নেওয়ার কথা আইনে বলা আছে। সুতরাং আমরা আইনটাও মানলাম আবার কাজটাও যেন হয়। সাপও মরবে লাঠিও ভাঙবে নাম, সেই ব্যবস্থা করছি। আমরা মিডিয়াকে এক্সেস দিতে চাই। কারণ আমরা পুরো ব্যাপারটা চাই ট্রান্সপারেন্ট।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট