সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গা উৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে উদযাপন নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে সাতক্ষীরা সীমান্তে নজরদারির বৃদ্ধির পাশপাশি সম্ভাব্য অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং যে কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ও অপতৎপরতা রোধে কঠোর নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বিজিবি।
বিজিবি সূত্র জানায়, আসন্ন শারদীয় দূর্গা উৎসব উপলক্ষে সীমান্ত এলাকায় সম্ভাব্য পাসপোর্ট ও ভিসাবিহীন অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং যে কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে সাতক্ষীরা সীমান্তে বিজিবির টহল তৎপরতা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একইসাথে প্রতিপক্ষের সাথে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়াদি অবগত করাসহ পূজামন্ডপ স্থলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বিজিবি।
এছাড়া পুণ্যার্থীরা যাতে স্বস্তি ও আস্থার সাথে তাদের দূর্গা উৎসব পালন নিশ্চিত করতে পারে সে জন্য সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ইতিমধ্যে দিন-রাত টহল, রেকি এবং মোবাইল পেট্রোল কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিজিবি সদস্যরা।
সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আশরাফুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে দূর্গা উৎসব উদযাপন নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার থেকে সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্ত এলাকার ৪৭টি পূজা মন্ডপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সাতক্ষীরা বিজিবি।
বিজিবি অধিনায়ক, লেঃ কর্নেল মোঃ আশরাফুল হক এর দিক নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় টহল তৎপরতা বৃদ্ধি, রেকিকরণ ও বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও প্রতিপক্ষ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সাথে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করা হয়। পতাকা বৈঠকে আসন্ন দূর্গা উৎসব উপলক্ষে সম্ভাব্য পাসপোর্ট ও ভিসা বিহীণ অবৈধ পারাপার, চোরাচালান এবং যে কোন অতৎপরতা প্রতিরোধে অধিকতর সজাগ দৃষ্টি রাখার বিষয়ে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একমত পোষণ করেন।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পূজাস্থলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ উৎসবপ্রিয় জনগণের স্বস্তি ও আস্থার সাথে যাতে দূর্গা উৎসব পালন নিশ্চিত করতে সেজন্য প্রতিটি পূজামন্ডপে দায়িত্বপ্রাপ্ত পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে বিজিবির পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বয় করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসাধারণের সাথে প্রতিনিয়ত মতবিনিময় ও স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও আনসারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে পুজা মন্ডপের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পদক্ষেপ ও গোয়েন্দা নজরদারি ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া যে কোন প্রয়োাজনে তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদান করার জন্য সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি) কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন পূজামন্ডপ ইতিমধ্যেই উৎসবমূখর পরিবেশে সাঁজানো হচ্ছে। এ বছরের শারদীয় দূর্গাপূজা সীমান্ত এলাকায় আনন্দময়, নিরাপদ ও সৌহার্দপূর্ণ উৎসবে পরিনত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ১৫টি বিওপি/ক্যাম্প ও ১টি বেইজ ক্যাম্পের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী ৪৭টি পূজা মন্ডপে যথাক্রমে পদ্মশাখরায় ২টি, ভোমরায় ১টি, গাজীপুরে ৬টি, ঘোনায় ৩টি, বাঁকাল এলাকায় ৪টি, বৈকারীতে ১টি, কুশখালীতে ৩টি, তলুইগাছায় ২টি, কাকডাঙ্গায় ৪টি, ঝাউডাঙ্গা এলাকায় ১৫টি, মাদরায় ১টি, হিজলদী এলাকায় ২টি ও চান্দুড়িয়ায় ১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।