ডেস্ক রিপোর্ট : উপমহাদেশের অন্যতম সুপারস্টার গায়ক মাহফুজ আনাম জেমসের জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর আজকের দিনে নওগাঁয় জন্মেছিলেন ‘নগর বাউল’খ্যাত এই রকস্টার। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। আজ ৬১ পেরিয়ে ৬২ বছরে পদার্পন করেছেন তিনি।
নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ক্যারিয়ারের দারুণ এক বসন্ত পার করছেন এই রক লিজেন্ড। জেমস শুধু একটি নাম নয়, এই নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অগণিত মানুষের ভালোলাগা, আবেগ ও অনুভূতি। গানের মাধ্যমে দুনিয়াজুড়েই খ্যাতি পেয়েছেন তিনি। জেমস নামে পরিচিত হলেও ভক্তদের কাছে তিনি আবার শুধুই গুরু।
জীবনের এতোগুলো বসন্ত পেরিয়ে এখনো চিরতরুণ এই রকতারকা। কারণ এখনো ঝাকড়া চুলে গিটার হাতে গানে গানে শ্রোতা-ভক্তদের মাতোয়ারা করে রাখেন তিনি। জেমসের কাছে বয়স শুধুই একটা সংখ্যা মাত্র। বয়সকে হার মানিয়ে এখনো ছুঁটে চলেছেন গানের এক জাদুকর হয়ে।
জেমসের জীবন বেশ বাঁক বদলের, অনেক গল্পের। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারি, যিনি পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের অমতেই সংগীতচর্চা শুরু করেন জেমস। বাবার সঙ্গে গান নিয়ে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। সংগীতের নেশায় ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং নামক একটি বোর্ডিং-এ তিনি থাকতে শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সংগীতের ক্যারিয়ার শুরু হয়।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফিলিংস’ নামক একটি ব্যান্ড। জেমস নিজেই ব্যান্ডের প্রধান গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। যদিও অ্যালবামটি সে সময়ে জনপ্রিয়তা পায়নি। পরে ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামের অ্যালবাম রিলিজ করে সুপারহিট হয়ে যান জেমস।
এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অফ ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো ফিলিংস ব্যান্ড থেকে বের হয়।
এছাড়াও জেমসের অন্যান্য অ্যালবামগুলো হল নগর বাউল থেকে ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘বিজলি’। একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’, ‘কাল যমুনা’।
শুধু অ্যালবামের গানে নয়, জেমস চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেও পেয়েছেন তুমুল সফলতা। বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানে কণ্ঠ দিয়েও জয় করেছেন কোটি ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ (গ্যাংস্টার), ‘চল চলে’ (ও লামহে) এবং ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ (লাইফ ইন অ্যা মেট্টো), ‘বেবাসি’ (ওয়ার্নিং) গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশের ‘সত্তা’ সিনেমায় গান গেয়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।