দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
এই পেশার সাথে জড়িত অধিকাংশ মানুষ নিম্ন আয়ের মানুষ। নতুন নৌকা তৈরি কিংবা চুক্তিতে নৌকা তৈরি করে তা বিক্রির মাধ্যমে যা আয় হয় তাই দিয়েই এই সকল পরিবারের সংসার চলে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজীরহাট এলাকার মোঃ আলাউদ্দিন বিগত ৪০ বছর ধরে নৌকা তৈরি করেন। নৌকা তৈরির কারিগর হিসাবেই তিনি বেশী পরিচিত। নৌকাই তার জীবন এবং তা তৈরি করেই তিনি সংসার চালান। নিজে নৌকার কারিগর হলেও ছেলেমেয়েকে তিনি এই পেশায় দেখতে চান না। তাই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। তিনি বলেন,‘নৌকা বানিয়ে এখনও তো পরিবার-পরিজন চালাই। তবে এই ব্যবসা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। তাই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করতে দিছি। তবে এখন আমরা কোন মতে চলতে আছি এবং বছর শেষে খুব কষ্টে দিন কাটে’। নৌকার দর-দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি গর্জন, আম ও সুবর্ণ কাঠের নৌকা তৈরি করছি। আমি বিভিন্ন সাইজের ডিঙি নৌকা তৈরি করি। নৌকা তৈরিতে মজুরি ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পাই। একটি নতুন নৌকা দুই জন মিস্ত্রী কাজ করলে ২০-২২ দিন সময় লাগে। তবে নৌকায় গাব, আলকাতরা কিংবা অন্য কোনো কারুকাজ থাকলে দামের তারতম্য হয়।
নৌকার কারিগর মোঃ আলাউদ্দিন আরও জানান, তার বাপ-দাদারা কেউ নৌকা তৈরি করতে না। তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনের বিলীন হয়ে যায় বাড়িঘরসহ ফসলি জমি। সব কিছু হারিয়ে নৌকা তৈরি করতে শুরু করেন। কয়েক বছর আগেও দামিদামি কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করতেন। তবে দিন দিন ভালো কাঠ দুর্লভ ও দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন মেহগনি, চাম্বল, রেইনট্রি, গাব, আমড়া, বাদাম প্রভৃতি কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করি। নৌকা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই কোন মতে সংসার চলে। এভাবেই চলছে নৌকা তৈরির কারিগরদের জীবন সংগ্রাম।