ডেস্ক রিপোর্ট : ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) মঙ্গলগ্রহের পাশে এক বিরল ধূমকেতুর ছবি তুলেছে। ধূমকেতুটির নাম ৩আই/অ্যাটলাস। এটি আমাদের সৌরজগতের বাইরের কোনো অঞ্চল থেকে এসেছে এবং ৩ অক্টোবর মঙ্গলের পাশ দিয়ে উড়ে গেছে।
ইএসএর এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস অরবিটার নামের মহাকাশযানটি এর ছবি তোলে। ছবিতে দেখা যায় একটি ফ্যাকাসে সাদা বিন্দু, যা ধূমকেতুর কেন্দ্র এবং তার চারপাশে গ্যাস ও ধূলিকণার আস্তরণ (কোমা) দিয়ে ঘেরা।
এই ধূমকেতু ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার কিলোমিটার গতিতে সূর্যের দিকে ছুটছে। তবে এটি সূর্যের চারদিকে ঘুরবে না—শুধু পাশ দিয়ে চলে গিয়ে আবার মহাশূন্যে ফিরে যাবে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি প্রায় ৭০০ কোটি বছরের পুরনো এবং মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পাতলা অংশ থেকে এসেছে।
সূর্যের কাছে আসার কারণে এর বরফ গলে গ্যাস ও ধূলিকণা বেরিয়ে আসছে, যা ঘিরে ফেলছে পুরো ধূমকেতুকে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ধরনের ধূমকেতু একেবারেই ‘ভিনদেশি’ বা অন্য তারকামণ্ডল থেকে আসা বস্তু। তাই এতে থাকতে পারে দূর জগতের সৃষ্টি ইতিহাসের ইঙ্গিত।
ইএসএর বিজ্ঞানী নিক থমাস বলেন, এটি পর্যবেক্ষণ করা খুবই কঠিন ছিল, কারণ ধূমকেতুটি সাধারণ লক্ষ্যবস্তুর তুলনায় প্রায় এক লাখ গুণ কম আলো ছড়াচ্ছিল।
আরেক বিজ্ঞানী কলিন উইলসন জানান, আমাদের মঙ্গল কক্ষপথের যন্ত্রগুলো সাধারণত মঙ্গল নিয়ে কাজ করে, কিন্তু এই ঘটনাটি দেখিয়েছে—অপ্রত্যাশিত সময়েও তারা কত বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ধূমকেতুটি আগামী ২৯ অক্টোবর ২০২৫ সালে সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে। তবে এটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয়; শুধু আমাদের সৌরজগৎ অতিক্রম করে চলে যাবে।
এটি এখন পর্যন্ত সৌরজগতের বাইরে থেকে আসা তৃতীয় ধূমকেতু। এর আগে ‘ওউমুয়ামুয়া’ ও ‘বোরিসভ’ নামের দুটি ধূমকেতু শনাক্ত হয়েছিল।
কিছু জ্যোতির্বিজ্ঞানী ধারণা করছেন, এটি কোনো অজানা ভিনগ্রহি প্রযুক্তি (alien technology) হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীদের মূলমত হলো—এই বিরল অতিথি আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার নতুন এক সুযোগ এনে দিয়েছে।