1. mesharulislammonir1122@gmail.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন
  2. info@www.sangjogprotidin.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

কাঁদতে কাঁদতে আইসিসিকে জীবনের দুঃখের গল্প শোনালেন মারুফা

  • প্রকাশিত: শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : গতির সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে ব্যাটারদের ভড়কে দিচ্ছেন মারুফা আক্তার। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে এসেই কাঁপিয়ে দিচ্ছেন মারুফা। লাসিথ মালিঙ্গা, নাসের হুসেন, মিতালি রাজ—সবার মুখেই এখন মারুফার প্রশংসা। বাংলাদেশের তারকা পেসার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) এক ভিডিও বার্তায় শোনালেন তাঁর এক সময়ের দুঃখের করুণ গল্প।
যে মারুফা এখন প্রতিপক্ষের কাছে আতঙ্কের এক নাম, তাঁর চলার পথটা মসৃণ ছিল না। নীলফামারীর সৈয়দপুরের হতদরিদ্র এক পরিবারে তাঁর জন্ম। ৬ সদস্যের পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে মারুফার বাবা বর্গা চাষ করতেন। আর্থিক অনটন থাকায় একটা সময় ভালো জামাকাপড় পরতে পারতেন না। যার ফলে কোনো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এই পেসার দাওয়াত পেতেন না। গুয়াহাটিতে গতকাল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে আইসিসির এক ডকুমেন্টারিতে মারুফাকে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কথা বলতে শোনা গেছে। ২০ বছর বয়সী এই পেসার বলেন,‘‘বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার যে সামাজিক রীতি, অনেকে সেটাও করতেন না। তাঁরা বলতেন, ‘তাদের ভালো পোশাক নেই। দাওয়াত দিলে মানসম্মান থাকবে না।’ এ ধরনের কথাবার্তা শুনতে হয়েছে।’
পুরোনো সেদিনের দুঃখের স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে মারুফা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন। আইসিসিতে প্রচারিত ডকুমেন্টারিতে বাংলাদেশের এই পেসার বলেন, ‘কোথাও যদি বিয়ে বা কোনোকিছু (অনুষ্ঠান) হয়, দাওয়াত দেয় না? আমাদেরকে সেটাও দিতো না। বলতো ওদের ড্রেস নাই, ওইখানে গেলে আমাদের মান সম্মান থাকবে না। এরকম বলতো অনেকে। একটা সময় ছিল যখন আমরা ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি।’
কথাগুলো বলতে বলতে তার দুই চোখ বেয়ে পানি পড়ছিল। শুধু আত্মীয়স্বজন দূরে ঠেলে রেখেছিল এমনই না, সমাজের মানুষও কটু কথা বলতে ছাড়তেন না। মেয়ে হয়ে প্যান্ট, টি-শার্ট পরা, ক্রিকেট খেলার জন্য তার মাকেও বাজে কথা শুনতে হয়েছিল।
মারুফা বলেন, ‘আমার বাবা একজন কৃষক। আমাদের ওইরকম পয়সাকড়ি ছিল না। আব্বা যখন বাসায় ছিল না, বাজারে যেতো তখন মাকে এসে অনেকে অনেক কথা বলতো। অনেক খারাপ খারাপ কথা বলে যেগুলা নেয়ার মতো না। আমার মা রুমে গিয়ে কান্না করতো। আমি আবার যাইয়া এক কোণায় কান্না করতাম যে আমার জন্য এতকিছু হচ্ছে।’
তবে আত্মীয়স্বজন কিংবা সমাজের মানুষের কটু কথা দমিয়ে রাখতে পারেনি মারুফাকে। দৃঢ় মনোবল, প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে তিনি আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গন মাতাচ্ছেন। আজকের এই অবস্থানে আসার জন্য সংকল্প করে রেখেছিলেন তখন থেকেই।
টাইগ্রেস এ পেসার বলেন, ‘আমি ভাবতাম ঠিক আছে, আমি একদিন ভালো কিছু করে দেখাব। এখন আমরা যেরকম অবস্থাতে এসেছি, অন্যরা এখন সেরকম জায়গায় নেই। আমি যেভাবে ফ্যামিলিকে সাপোর্ট করছি, অনেক ছেলেরাও হয়তো সেভাবে পারছে না। এটা অন্যরকম একটা শান্তি দেয়। ছোটবেলায় ভেবেছি মানুষ কবে আমাদের এভাবে দেখবে, হাততালি দিবে, এখন টিভিতে (নিজেকে) দেখলে লজ্জা লাগে (হাসি)।’
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় আগ্রহ ছিল মারুফার। একটা সময় ভাইদের সঙ্গে এলাকাতে ক্রিকেটও খেলেছেন। এরপর প্রতিবেশী চাচা নাজমুল হুদার সঙ্গে সৈয়দপুরে গিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন শুরু করেন। নিজ প্রতিভায় ২০১৮ সালে বিকেএসপির নজরে এলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ভর্তি হতে পারেনি। তবে সুযোগ মেলে খুলনা বিভাগীয় দলে। সেখানে আলো ছড়িয়ে জায়গা করে নেন বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দল। সেখান থেকেই তার সাফল্যের শুরু।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট