
ডুমুরিয়া (খুলনা)প্রতিনিধি : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় চলছে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময়। অধিক ফলনের আশায় কৃষকরা দিন-রাত পরিশ্রম করে পরিপক্ব ধান ঘরে তোলার কাজে মনোনিবেশ করেছেন। বেশিরভাগ এলাকায় বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে হঠাৎ বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় তারা দ্রুত ফসল সংগ্রহে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) খুলনা অঞ্চলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে খুলনা বিভাগের চারটি জেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৯৮,৬৩৫ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষ হয়েছে ৯৭,২৯০ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৭.২ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট আবাদযোগ্য জমির ১৭.৪ শতাংশ— অর্থাৎ ২০,০৭০ হেক্টর জমিতে ফসল কাটা সম্পন্ন হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের মূল্যায়নে জানানো হয়েছে, এ মৌসুমে অঞ্চলটিতে প্রায় ১,৫৯,৯০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকরা বলছেন, পরিপক্ব ধান মাঠে বেশি দিন রাখলে বৃষ্টি বা শীলাবৃষ্টিতে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই তারা দ্রুত ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। উপজেলার কৃষক আব্দুল গনি জানান,
“আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর উৎপাদন ভালো। ফসল কাটা শেষের পথে, এখন মাড়াই চলছে। অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির ভয় আছে, তাই যত দ্রুত সম্ভব ধান ঘরে তুলতে কাজ করছি।”
খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা গ্রামের কৃষক শফিকুল শেখ বলেন,
“আমার জমির ধান কাটা প্রায় শেষ। এখন মাড়াই করছি। আমন মৌসুম শেষে আমরা ডাল ও শীতকালীন সবজি রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নূরুন নাহার জানান,
“কৃষকরা এখন সবচেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমরা মাঠে নেমে তাদের দ্রুত ফসল কেটে নিরাপদে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ক্ষতি না হয়।”
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসান ইবনে আমিন বলেন,
“এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। কৃষকদের আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বিবেচনায় দ্রুত ফসল কাটার নির্দেশনা দিয়েছি। সঠিক মাড়াই ও সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়েও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“আমন মৌসুম শেষের পরই রবি ফসল, ডাল ও শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হবে। এসব ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় মাঠ পর্যায়ের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।”