সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: চাঁদা না পেয়ে প্রতিপক্ষের বসতবাড়ি ও চিংড়ি ঘেরে হামলাসহ ভাংচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম আবুর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। উপজেলার ঈশ^রীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমঘাট গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ দ্রুত বিচার আদালতে উক্ত মামলাটি দায়ের করেছেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালতে আর্জি উপস্থাপনের পর বিচারক সোমবার মামলাটি (সিআর ৫১/২৫) গ্রহণপুর্বক শুনানীর জন্য ১৬ নভেম্বর পরবতী দিন ধার্য্য করেছেন। শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আবু উপজেলার আবাদচন্ডিপুর মুনসুর সরদার গ্যারেজ এলাকার ডাঃ লুৎফর রহমানের ছেলে। মামলায় শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের হাবিবুর রহমান গাজী, ইমরান হোসেন, নাইম ও অন্তাখালী গ্রামের এবাদুল গাজীসহ অজ্ঞাত নামীয় পাঁচ/ছয় জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে জমি-জমা নিয়ে পুর্ব বিরোধের জেরে আব্দুর রশিদের শীলতলা ধুমঘাট এলাকার ভোগদখলীয় সম্পত্তি জবরদখলে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছিল প্রতিপক্ষ। একপর্যায়ে উক্ত সম্পত্তিতে চিংড়িঘের পরিচালনা করার শর্তে তারা আব্দুর রশিদের নিকট তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তবে চাঁদা না পেয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর ছাত্রদল আহবায়ক আবুর নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার বসতবাড়িতে হামলা করে। একপর্যায়ে নগদ ৮০ হাজার টাকা লুটসহ ঘরের ছাউনি ও মটর সাইকেল ভাংচুরের পাশাপাশি ঘর থেকে জিনিসপত্র বাইরে এনে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরবর্তীতে চিংড়িঘেরে হামলা চালিয়ে আরও প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
বাদি আব্দুর রশিদের ভাষ্য থানায় মামলা করতে না পেরে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ার কারনে মামলা দায়েরের পর থেকে পরিবারের সদস্যসহ তাকে নানাভাবে হুমকি ধমকী দেয়া হচ্ছে। এমনকি একজন স্বাক্ষীর বোনকে হুমকি দেয়া হয়েছে। ফলে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরী করবেন।
মামলা এবং অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম আবু জানান এধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ইতিপুর্বে তিনি এমন একটি বিষয় পত্রপত্রিকায় দেখেছিলেন এবং মৎস্য ঘেরসহ বসতবাড়ি ঠিকঠাক রয়েছে। মটর সাইকেলটি আগে থেকে ভাঙা ছিল বলে পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছিল। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব চক্রান্ত চলছে।
উল্লেখ্য উক্ত ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে জেলেখালী নাসিরাবাদ এতিমখানার অনুকুলে থাকা সরকারি খাল ও শাওন ফিস নামীয় এক হাজার বিঘা আয়তনের চিংড়ি ঘের দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মাদককান্ডের জেরে ছাত্রদল কর্মীর পক্ষ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাকে হুমকি প্রদানের মত নানান বিতর্কিত ঘটনারও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম আবু বিরুদ্ধে ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারি মোঃ আব্দুর রশিদ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধুমঘাট (শিলতলা) গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে জমি ও খাল দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। রবিবার সকাল ১১টার দিকে ছাত্রদল সভাপতি আবু এবং তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে আব্দুর রশিদের ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং খাল দখলের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হোসেন জানান, রড ও লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রদল সভাপতির নেতৃত্বে একদল লোক হামলা চালায়, ঘরের নেট-পাটা ভেঙে দেয় এবং হুমকি দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা রানী বলেন, ‘প্রাইভেটকার থেকে নামা আবু তার বাহিনী নিয়ে হামলা চালায়, মোটরসাইকেল ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।’
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম আবু বলেছেন, ‘আমার কোনো জড়িত নেই। ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও খাল দখলের অভিযোগ মিথ্যা।’
শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. সোলায়মান কবির বলেন, ‘দল ও তার অঙ্গ সংগঠনের নামে দখলবাজি বা অপরাধমূলক কাজ করলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’