1. mesharulislammonir1122@gmail.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন
  2. info@www.sangjogprotidin.com : দৈনিক সংযোগ প্রতিদিন :
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:১৭ অপরাহ্ন

ভূমিকম্পের কারণ বিজ্ঞানীরা কি বলে, হাদিস কোরআন কি বলেছে

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ‌: ভূমিকম্প হওয়ার কারণ : আধুনিক বিজ্ঞানের মতে, ভূ-অভ্যন্তরে স্থিত গ্যাস যখন ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল বা আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে তখন সেই গ্যাসের অবস্থানটি ফাঁকা হয়ে পড়ে আর পৃথিবীর উপরের তলের চাপ ওই ফাঁকা স্থানে দেবে গিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখে। তখনই ভূ-পৃষ্ঠে প্রবল কম্পনের অনুভব হয়, যা ভূমিকম্প নামে পরিচিত। সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকেÑ ১. ভূ-পৃষ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তন জনিত কারণে, ২. আগ্নেয়গিরি সংঘটিত হওয়ার কারণে ও ৩. শিলাচ্যুতি জনিত কারণে।
আল্লামা ইবনু কাইয়িম র. বলেন, মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন। ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তখন এ ভূমিকম্প মানুষকে ভীত করে। তারা মহান আল্লাহর নিকট তওবা করে, পাপ কর্ম ছেড়ে দেয়, আল্লাহর প্রতি ধাবিত হয় এবং তাদের কৃত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মোনাজাত করে। আগেকার যুগে যখন ভূমিকম্প হতো, তখন সঠিক পথে পরিচালিত সৎকর্মশীল লোকেরা বলত, ‘মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।’
ভূমিকম্প বিষয়ে পবিত্র কোরআনের ‘যিলযাল’ নামে স্বতন্ত্র একটি সুরা নাজিল করা হয়েছে। মানুষ শুধু কোনো ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এবং ভূতত্ত্ববিজ্ঞানও এ কার্যকারণ সম্পর্কেই আলোচনা করে থাকে।
এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ সা. বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে; কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে, কিন্তু তা আত্মসাৎ করা হবে (অর্থাৎ যার সম্পদ সে আর ফেরত পাবে না); জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে; ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে; একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে; বন্ধুকে কাছে টেনে নেবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে; মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে শোরগোল (কথাবার্তা) হবে; যখন সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসকরূপে আবির্ভূত হবেÑ সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথর বৃষ্টির। তখন সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য অপেক্ষা করো।’ (তিরমিজি, হাদিস নং ১৪৪৭)
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, ৫৯)
তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনয়াম, ৬৫)। সহিহ বুখারির বর্ণনায় বিখ্যাত সাহাবি জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘যখন তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন রাসুল সা. বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’
শায়খ ইস্পাহানি র. এ আয়াতের তাফসির করে বলেন, ‘এর ব্যাখ্যা হলো, ভূমিকম্প ও ভূমিধসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া (পৃথিবীতে ভূমিকম্প হওয়া)।’
ভূমিকম্প কেয়ামতের একটি আলামত : রাসুল সা. বলেছেন, তখন পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফেতনা প্রকাশ পাবে এবং খুনখারাবি বাড়বে, তোমাদের সম্পদ এতো বাড়বে যে, উপচে পড়বে। (বুখারি, হাদিস নং ৯৭৯)। বর্তমানে যেসব ভূমিকম্প ঘটছে, তা মহান আল্লাহর প্রেরিত সতর্ককারী নিদর্শনগুলোর একটি। এগুলো দিয়ে তিনি তার বান্দাদের সাবধান করে থাকেন। কার্যত এগুলো মানুষের পাপ ও অপরাধের ফল। আল্লাহ বলেন, ‘যে বিপদ আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা, ৩০) ।
কয়েক বছর আগে নেপালে ভূমিকম্প হলে সেখানকার হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবন্দ বলেছিলেন, বহু পূর্বেই আমরা অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার আধিক্য দেখে সবাইকে সাবধান করেছিলাম। অন্যায় ও পাপাচার বৃদ্ধি পাওয়ায় ভগবান ক্ষুব্ধ হয়ে ভূমিকম্পরূপে শাস্তি পাঠিয়েছেন। ভারতের মন্দিরে আতশবাজি বিস্ফোরণে শতাধিক ভক্ত নিহত ও প্রায় তিনশ’ গুরুতর আহত হওয়ার পেছনেও পাপাচারে মানুষের সীমালঙ্ঘনকে দায়ী করেছেন ধর্মীয় নেতারা। বছর কয়েক আগে কেদারনাথে প্রবল বন্যায় বহু হতাহতের জন্যে মানুষের পাপ ও সীমালঙ্ঘনকেই দায়ী করা হয়। ইহুদি ও খ্রিষ্ট ধর্মেও এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত।
ভূমিকম্প হলে করণীয় : আপদ-বিপদ, সুখশান্তি সর্বাবস্থায়ই প্রত্যেক মুসলমানকে আল্লাহর ওপর ভরসা করা উচিত। বিশেষত দুর্যোগ, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প প্রভৃতি মুসিবতের সময় খুবই আন্তরিকভাবে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা উচিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি জনপদের মানুষগুলো ঈমান আনত এবং (আল্লাহকে) ভয় করত, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম। কিন্তু তারা (আমার নবিকেই) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং তাদের কৃতকর্মের জন্য আমি তাদের পাকড়াও করলাম।’ (সুরা আরাফ, ৯৬)। তাই যখন কোথাও ভূমিকম্প হয় অথবা সূর্যগ্রহণ কিংবা ঝড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তওবা করা। তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা। মহান আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।
পৃথিবীতে প্রাকৃতিক যত দুর্যোগ রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে ভূমিকম্প। কারণ অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গেলেও ভূমিকম্প এর ব্যতিক্রম। ভূমিকম্পের আগে কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না। ফলে এতে ব্যাপক জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইসলামিক দৃষ্টিতে ভূমিকম্প মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক ধরনের সতর্কবার্তা। এমন দুর্ঘটনার সময় মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তাওবা করা। তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা। মহান আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা ও তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
মানুষকে সতর্ক করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘জনপদের অধিবাসীরা কি এতই নির্ভয় হয়ে গেছে যে, আমার আজাব (নিঝুম) রাত তাদের কাছে আসবে না, তারা (গভীর) ঘুমে (বিভোর হয়ে) থাকবে!’ (সুরা আরাফ: ৯৭
বান্দার অপরাধ ক্ষমা প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক অপরাধ ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা: ৩০
পবিত্র কোরআনে ভূমিকম্প বিষয়ে ‘যিলযাল’ এবং ‘দাক্কা’ শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘যিলযাল’ অর্থ হচ্ছে একটি বস্তুর নড়াচড়ায় আরেকটি বস্তু নড়ে ওঠা। ‘দাক্কা’ অর্থ হচ্ছে প্রচণ্ড কোনো শব্দ বা আওয়াজের কারণে কোনো কিছু নড়ে ওঠা বা ঝাঁকুনি খাওয়া।
ভূমিকম্প সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণের মুখোমুখি হবে। একজন সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, কখন সেটা হবে হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বলেন, যখন গায়িকা এবং বাদ্যযন্ত্রের প্রকাশ ঘটবে এবং মদপানের সয়লাব হবে।’ (তিরমিজি: ২২১২)
অন্যত্র বলা হয়েছে, ভূমিকম্প হচ্ছে কিয়ামতের একটি অন্যতম আলামত। কিয়ামত যতই নিকটবর্তী হবে, ভূমিকম্পের পরিমাণ ততই বাড়তে থাকে।
ভূমিকম্পের বিভীষিকা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে মানব জাতি, তোমরা ভয় করো তোমাদের রবকে। নিশ্চয়ই কেয়ামত দিবসের ভূকম্পন হবে মারাত্মক ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, স্তন্যপায়ী মা তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানের কথা ভুলে যাবে আর সব গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। মানুষকে মাতালের মতো দেখাবে, আসলে তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা হজ: ১-২)
ভূমিকম্পের বেশকিছু কারণ সম্পর্কে জানা যায় হাদিসের মাধ্যমে। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে। কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখলে তা আত্মসাৎ করা হবে। জাকাতকে মনে করা হবে জরিমানা হিসেবে। ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে। পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে। বন্ধুকে কাছে টেনে নিয়ে বাবাকে দূরে সরিয়ে দেবে। মসজিদে শোরগোল (কথাবার্তা) হবে। সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তি সমাজের শাসক হবে। সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো—রক্তিম বর্ণের ঝড়ের, ভূকম্পনের, ভূমিধসের, লিঙ্গ পরিবর্তন, পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য।’ (তিরমিজি:
তাই বলা যায়, বর্তমানে যেসব ভূমিকম্প হচ্ছে, তা মহান আল্লাহর পাঠানো সতর্কবার্তার নিদর্শনগুলোর একটি। এগুলো দিয়ে তিনি বান্দাদের সাবধান করেন। মূলত এগুলো মানুষের পাপ ও অপরাধের ফল। কেননা আল্লাহ অধিকাংশ জাতিকে ভূমিকম্পের গজব দিয়ে ধ্বংস করেছেন।
ভূমিকম্প পৃথিবীর অভ্যন্তরে সংঘটিত এক প্রাকৃতিক কম্পন, যা মুহূর্তের মধ্যেই ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। এটি মূলত ভূ-গঠনে পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন মাত্রার হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বাংলাদেশও বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে। তাই ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও সঠিক প্রস্তুতি রাখা অত্যন্ত জরুরী।
ভূমিকম্প হলো ভূ-পৃষ্ঠের আকস্মিক কম্পন, যা সাধারণত ভূ-অভ্যন্তরে শিলার পরিবর্তন বা ভূ-পৃষ্ঠের দারুণ চাপের ফলে ঘটে। গবেষকদের মতে, বছরে গড়ে ৬,০০০ ভূমিকম্প হয়, যার বেশিরভাগই মৃদু। ভূমিকম্প সাধারণত তিন ধরনের হয়: প্রচণ্ড, মাঝারি ও মৃদু। এছাড়া কেন্দ্রস্থলের গভীরতার ভিত্তিতে ভূমিকম্প তিন প্রকার হতে পারে: অগভীর (৭০ কিলোমিটারের মধ্যে), মধ্যবর্তী (৭০-৩০০ কিলোমিটার) ও গভীর (৩০০ কিলোমিটারের বেশি গভীরতা)
ভূমিকম্প সাধারণত তিনটি প্রধান কারণে হয়:
১. ভূ-পৃষ্ঠের আকস্মিক পরিবর্তন
২. আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত
৩. ভূ-অভ্যন্তরে শিলাচ্যুতির ফলে চাপ সৃষ্টি
ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেল দিয়ে পরিমাপ করা হয়, যেখানে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ৫-এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্পকে বিপজ্জনক ধরা হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা যদি ৭ বা তার বেশি হয়, তবে তা ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের শামিল।
১.ভূমিকম্প শুরু হলে দ্রুত ফাঁকা স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিন।
২. উঁচু ভবনে থাকলে বের হতে না পারলে শক্ত খাম্বা বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।
আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করুন।
৩. ভবন থেকে লাফ দেওয়ার পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন, তবে লিফট ব্যবহার করবেন না।
৪. জরুরি নম্বর সংরক্ষণ করুন এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করুন।
৫. গাড়িতে থাকলে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি থামিয়ে ভেতরেই অবস্থান করুন।
৬. ভূমিকম্পের পর আফটার শক হতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে, যা মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে। সম্প্রতি মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, যা থাইল্যান্ডসহ আশপাশের দেশগুলোতে প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানেও বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে।
বাড়ির কাঠামো ভূমিকম্প-সহনশীল কিনা তা পরীক্ষা করা যেতে পারে। অবশ্যই চিকিৎসা বাক্স, খাবার ও জরুরি সামগ্রী সংরক্ষণ রাখতে হবে। পরিবার ও কর্মস্থলে ভূমিকম্পের সময় করণীয় বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও দমকল বাহিনী ও জরুরি সেবাগুলোর নম্বর সংগ্রহে রাখতে হবে।
ভূমিকম্প কবে হবে, তা আগে থেকে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে আগেভাগে প্রস্তুতি নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং ভূমিকম্পের সময় সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমিকম্প মোকাবিলায় আমাদের সচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতি জীবন বাঁচাতে পারে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে অনেকেই এরকম প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন––“কখন ভূমিকম্প হইছে তার কিছুই জানি না আমি”, “ভূমিকম্পের দেড় ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে উঠে পড়েছি, তবুও কিছুই অনুভব করিনি”, বা “ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে এসে দেখছি দেশে ভূমিকম্প হয়েছে।” একই সময়ে একই স্থানে থাকার পরও কেন সবাই ভূমিকম্প অনুভব করে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ হলো সংবেদনশীলতা এবং ব্যক্তির অবস্থান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আপনি কত তলায় আছেন, তার ওপর এটি নির্ভর করছে। উপরের তলায় থাকলে ঝাঁকুনি অনুভব করার সম্ভাবনা বেশি, নিচে থাকলে কম।”
তাঁর মতে, কিছু মানুষ প্রাকৃতিকভাবে গতি ও কম্পনকে খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারেন। তাই যারা ভূমিকম্প টের পান না, তাদের সেনসিটিভিটি বা সংবেদনশীলতা কম। “অনেকে আছেন যারা উচ্চতা নিতে পারেন না, তারা মোশন বা গতির ক্ষেত্রে সংবেদনশীল নয়। সেই কারণে ভূমিকম্প অনুভব করতে পারেন না।”
ভূমিকম্প অনুভবের ক্ষেত্রে ব্যক্তির অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্রামে থাকা বা চুপচাপ বসে থাকা মানুষ কম্পন ভালো টের পান। অন্যদিকে দৌড়ানো, রান্না করা বা চলাফেরার সময় ভূমিকম্প কম টের পাওয়া যায়। ফলে, একই সময়ে একই জায়গায় থাকা মানুষজনও ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।
বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে নরসিংদীর মাধবদীতে। আগের ৭ জানুয়ারি সারা দেশে তিব্বতের শিগেৎসে থেকে অনুভূত ভূমিকম্পের দূরত্ব ঢাকার সাথে ছিল ৬১৮ কিলোমিটার। এছাড়া ১৩ জানুয়ারিতেও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। বাংলাদেশের অবস্থান ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে, যেখানে দেশের ভেতরে ও বাইরে বড় বড় ফল্ট আছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ বিভিন্ন প্লেট ও সাব-প্লেট দিয়ে তৈরি। এরা নরম পদার্থের ওপর ভেসে থাকে এবং সেগুলো সরার সময় বা একে অন্যকে ধাক্কা দেওয়ার ফলে ভূ-পৃষ্ঠে কম্পন তৈরি হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডাউকি ফল্ট অন্যতম উৎস, যা শেরপুর থেকে জাফলং হয়ে ভারতের করিমগঞ্জ পর্যন্ত বিস্ত।
ভূমিকম্প পরিমাপের জন্য মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল (MW) ব্যবহৃত হয়, যা রিখটার স্কেলকে প্রতিস্থাপন করেছে। কম্পনের মাত্রা ও স্থায়ীত্বক্ষেত্র ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ মাত্রার কম্পন সামান্য ক্ষতি করতে পারে, সাত দশমিক আট বা তার বেশি ক্ষয়ক্ষতি মারাত্মক হতে পারে।
দুটি টেকটোনিক প্লেট বা সাব-প্লেট পরস্পরের দিকে অগ্রসর হলে একটি অন্যটির নিচে প্রবেশ করে। ভারি পাতটি হালকা পাতের নিচে ঢুকে সাবডাকশন জোন তৈরি করে। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, এসব অঞ্চলে বড় আকারের দুটি ভূমিকম্পের মাঝে সময়ের ব্যবধান প্রায় ৮০০–৯০০ বছর।
একই সময়ে একই স্থানে থাকলেও ভূমিকম্প টের পাওয়া ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। এর কারণ হলো সংবেদনশীলতা, অবস্থান, প্লেট চলাচল, ভূমিকম্পের মাত্রা ও স্থায়ীত্ব, এবং দেশের ভূতাত্ত্বিক অবস্থান। বাংলাদেশ মডারেটলি ভূমিকম্পপ্রবণ হলেও প্রস্তুতির অভাব রয়েছে, বিশেষ করে বিল্ডিং কোডের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণে ঝুঁকি রয়ে গেছে।
(২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭. এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী ম্র মাধবী। এটি একটি মাঝারি শ্রেণির ভূমিকম্প। গত মার্চ মাসে ৭ দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে মিয়ানমার। ভূমিকম্পের পর ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও এর প্রভাব পড়েছে এবং কিছু ভবন ধসে পড়েছে।
ভূমিকম্পের মাত্রা একই থাকলেও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দেশে দেশে ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, গত ৭ জানুয়ারি তিব্বতে সাত দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পে হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয় এবং শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। অপরদিকে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একই মাত্রার ভূমিকম্পে কোনো প্রাণহানি বা উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়ন
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণে কম্পনের মাত্রা এবং স্থায়ীত্বকাল গুরুত্বপূর্ণ। রিখটার স্কেল বা মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল (এমডব্লিউ) ব্যবহার করে কম্পনের শক্তি মাপা হয়। সাধারণত পাঁচ মাত্রার কম্পন মানুষ বুঝতে পারে, সাত মাত্রার উপরে কম্পনকে বড় কম্পন এবং আট মাত্রার বেশি হলে তা বড় দুর্বিপাক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও কম্পন কতক্ষণ স্থায়ী হয়, তাও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বাড়াতে বা কমাতে ভূমিকা রাখে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল বা গভীরতা ক্ষয়ক্ষতির মাত্রায় প্রভাব ফেলে। ২০২৩ সালের মরক্কোর ছয় দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিমি গভীরে ছিল, যা অগভীর হওয়ায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়ার ছয় দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্র ১৬৮ কিমি গভীরে হওয়ায় কোনো প্রাণহানি হয়নি।
ভূমিকম্পের সময়কাল এবং দিনের সময়ও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা প্রভাবিত করে। রাতে ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়, কারণ মানুষ ঘুমে থাকে। তবে মূল কারণ হলো ভবনের দুর্বলতা। মরক্কোতে ধ্বংসের প্রধান কারণ ছিল পুড়িয়ে বা রোদে শুকানো ইটের বাড়ি। জাপান এবং তুরস্কের উদাহরণ দেখায়, সঠিক নীতিমালা মেনে নির্মিত না হলে শক্তিশালী ভূমিকম্পও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।
জনসংখ্যার ঘনত্বও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে আলাস্কার আট দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পে কোনো প্রাণহানি হয়নি, কারণ কেন্দ্রস্থল জনবসতি থেকে দূরে ছিল। তুলনামূলকভাবে, ২০১০ সালের হাইতির সাত মাত্রার ভূমিকম্পে আড়াই লাখের বেশি মানুষ মারা যায়, কারণ রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করছিল।
মাটির ধরনও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা প্রভাবিত করে। নরম মাটি কম্পনকে তরল পদার্থের মতো প্রতিফলিত করে এবং ধ্বংসযজ্ঞ বাড়ায়। শক্ত ও পাথুরে মাটি কম্পনের ধাক্কা প্রতিহত করে। ১৯৬৪ সালে জাপান এবং ২০২৩ সালে তুরস্কের এরজিন শহরের উদাহরণ এ বিষয়টি স্পষ্ট ক করে।
জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম ও পূর্বপ্রস্তুতি প্রাণহানির মাত্রা কমাতে সহায়ক। যত দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু হবে, তত বেশি জীবন বাঁচানো সম্ভব। জাপান এবং তাইওয়ানে নিয়মিত ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও অনুশীলন করা হয়। তুরস্কে দশ দিন পর উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ায় অনেক মানুষ বাঁচানো যায়নি।
ভূমিকম্পের সেকেন্ডারি প্রভাব যেমন সুনামি, ভূমিধসও ক্ষয়ক্ষতি বাড়ায়। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামিতে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যায়। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিকম্পের পর ভূমিধসও বাড়তি ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়। ১৯০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে ২০–২৫ সেকেন্ড স্থায়ী ভূমিকম্পে পানির ও গ্যাসের পাইপলাইন ভেঙে আগুন লেগে প্রায় তিন হাজার মানুষ মারা যায়। এসব উদাহরণ দেখায়, একই মাত্রার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অবস্থান, অবকাঠামো ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে।
আমরা যে ভূপৃষ্ঠে বসবাস করি হঠাৎ কখনো তা কেঁপে উঠে। বড় ধরনের ঝাঁকুনি দেয়। এই কেঁপে উঠাকে বলা হয় ভূমিকম্প। ধারণা করা হয়, ভূ অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে তখন ভূমি কম্পন হয়।
ভূমিকম্প মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলে। এ সময় মানুষ দ্বিগবিদিক হয়ে ছুটাছুটি করেন। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থাকেন। সৃষ্টিকর্তা মহান রবের ওপর নির্ভর করেন। তার কাছেই আশু বিপদ থেকে রক্ষা চান।
ইসলামী ধারণা অনুযায়ী ভূমিকম্প এবং বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পরীক্ষা করেন। অথবা মানুষ যে পাপাচার করে তা থেকে ফিরিয়ে আনতে সতর্ক করেন।  পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষের কৃতকর্মের কারণে স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে; ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা আর-রুম, আয়াত : ৪১)
পৃথিবীতে ভূমিকম্প বা যেই বিপযর্য় ঘটে তা কিয়ামতের তুলনায় সামন্য এবং তার কিছু নমুনা হিসেবে বাস্তবায়িত হয়। ভূমিকম্পের সময় মানুষ হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে নিজেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠে। কিয়ামত দিবস এর থেকেও ভয়াবহ হবে।
ভূমিকম্প মুমিনের জন্য যে সতর্কবার্তা নিয়ে আসে
সুরা যিলযালে ভূমিকম্পের যে ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে
ভূমিকম্পে নিহতদের আল্লাহ যে পুরস্কার দেবেন
ভূমিকম্পের বিভীষিকা নিয়ে কোরআনের এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন— ‘হে মানব সকল, তোমরা ভয় করো তোমাদের রবকে। নিশ্চয়ই কেয়ামত দিবসের ভূকম্পন হবে এক মারাত্মক ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, স্তন্যপায়ী মা তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানের কথা ভুলে যাবে আর সব গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। দৃশ্যত মানুষকে মাতালের মতো দেখাবে, আসলে তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা হজ, আয়াত : ১-২)
পবিত্র কোরআনের সুরা যিলযালে ভূমিকম্প নিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখন জমিন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে। আর জমিন তার বোঝা বের করে দেবে। আর মানুষ বলবে, এর কী হলো? সেদিন জমিন তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে। কারণ আপনার রব তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে বের হয়ে আসবে যাতে দেখানো যায় তাদেরকে তাদের নিজদের কৃতকর্ম।’ (সুরা আজ-জিলজাল: আয়াত ১-৬)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘অতঃপর ভূমিকম্প তাদের গ্রাস করল, আর তারা নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।’ (সুরা আল-আরাফ, আয়াত : ৭৮)
পবিত্র কোরআনে সুরা ওয়াকিয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যখন জমিন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে। আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে। (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত : ৪-৬)
হাদিসে ভূমিকম্পের কারণ নিয়ে এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে, কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে কিন্তু তার খেয়ানত করা হবে, জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে কিন্তু মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে, বন্ধুকে কাছে টেনে নিয়ে পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে, মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে শোরগোল হবে, জাতির সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসকরূপে আবির্ভূত হবে, সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি হবে নেতা, একজন মানুষ যে খারাপ কাজ করে খ্যাতি অর্জন করবে, তাকে তার খারাপ কাজের ভয়ে সম্মান প্রদর্শন করা হবে, বাদ্যযন্ত্র এবং নারী শিল্পীর ব্যাপক প্রচলন হবে, মদ পান করা হবে, লোকজন তাদের পূর্ববর্তী মানুষগুলোকে অভিশাপ দেবে, এমন সময় তীব্র বাতাস প্রবাহিত হবে এবং এমন একটি ভূমিকম্প হবে যা সেই ভূমিকে তলিয়ে দেবে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৪৪৭)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন. ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথরবর্ষণের মুখোমুখি হবে। একজন সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, কখন সেটা হবে হে আল্লাহ রাসুল? তিনি বলেন, যখন গায়িকা এবং বাদ্যযন্ত্রের প্রকাশ ঘটবে এবং মদপানের সয়লাব হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২২১২)

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট